করোনা বিষয়ে জানতে মিনিটে ১৮ কল

প্রতি মিনিটে ১৮টি করে কল আসছে করোনাভাইরাস বিষয়ে জানার জন্য। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বা কোভিড–১৯ বিষয়ে তরুণদের মধ্যে আগ্রহ বেশি। ঢাকার পর চট্টগ্রামের মানুষই এ ব্যাপারে বেশি জানতে চায়।

‘স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩’, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) ও ৩৩৩ নম্বরে আসা ফোনকল বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে। স্বাস্থ্য বাতায়নের ৮৪ শতাংশ কল আসছে করোনাভাইরাস বিষয়ে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ১৯ মার্চ ২৪ ঘণ্টায় স্বাস্থ্য বাতায়নে ২০ হাজার ৮৮৫টি কল এসেছে। একই সময়ে আইইডিসিআরে ফোন এসেছে ৩ হাজার ২৯টি। আর ৩৩৩ নম্বরে ফোন এসেছে ২ হাজার ১১০টি। অর্থাৎ প্রতি মিনিটে ১৮টি ফোন আসছে করোনা বিষয়ে জানার জন্য বা সহায়তা চেয়ে। এর মধ্যে স্বাস্থ্য বাতায়নে আসা ফোন কলগুলোর বিশ্লেষণ পাওয়া গেছে।

সরকারের স্বাস্থ্যবিষয়ক কলসেন্টার ‘১৬২৬৩’–তে ফোন করে মানুষ স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, হাসপাতাল, ওষুধ এসব বিষয়ে জানতে চায়। ফোনের অন্য প্রান্তে থাকা চিকিৎসকেরা এসব প্রশ্নের উত্তর দেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয়ে এখন মানুষ জানতে চাইছে বেশি। স্বাস্থ্য বাতায়নের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘করোনা বিষয়ে মানুষের ব্যাপক আগ্রহ। করোনাভাইরাস কী, এটাই ফোন করে মানুষ বেশি জানতে চায়।’

করোনাভাইরাস বিষয়ে সবচেয়ে বেশি জানতে চাওয়া হয় এমন শীর্ষ ১০টি প্রশ্নের তালিকা করেছে স্বাস্থ্য বাতায়ন। প্রথম তিনটি হচ্ছে করোনাভাইরাস কী, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে কী লক্ষণ দেখা দেয়, ভাইরাস প্রতিরোধের উপায় কী। অন্য প্রশ্নগুলোর মধ্যে আছে করোনা শনাক্তের পরীক্ষা কোথায় হয়, হাতে বা শরীরের কোথাও এ ভাইরাস লাগলে কতক্ষণ বেঁচে থাকে, আক্রান্ত মা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন কি না, এর কোনো চিকিৎসা আছে কি না, প্রতিরোধে টিকা আছে কি না, থানকুনির পাতা খেলে রোগ ভালো হয় কি না এবং ধূমপান বন্ধ করলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায় কি না।

১ থেকে ১৮ মার্চ পর্যন্ত স্বাস্থ্য বাতায়নে কল এসেছে ৩ লাখ ১১ হাজার ২৫২টি। এর মধ্যে ২ লাখ ৬১ হাজার ৪৫২টি বা ৮৪ শতাংশ কল করোনাবিষয়ক। কলের পরিমাণ বেড়েছে ৮ মার্চ থেকে। ওই দিন দেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্তের খবর প্রথম গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়।

বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, করোনাভাইরাস–সংক্রান্ত কলের ৭৫ শতাংশ এসেছে পুরুষের কাছ থেকে, নারীর কাছ থেকে ২৫ শতাংশ। যাঁরা ফোন করেন তাঁদের বয়সের বিভাজনও করেছে স্বাস্থ্য বাতায়ন। সবচেয়ে বেশি কল করেন ১৬ থেকে ২৫ বছর বয়সীরা। পুরুষদের ৫৬ শতাংশ ও নারীদের ৪৪ শতাংশ কল আসে এই বয়সীদের কাছ থেকে। ১০ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬০ বছরের বেশি বয়সীরাও ফোন করে করোনাভাইরাস বিষয়ে জানতে চান।

স্বাস্থ্য বাতায়নে দিনের বা রাতের যেকোনো সময় ফোন করে চিকিৎসকদের কাছ থেকে পরামর্শ পাওয়া যায়। দেশের ৮টি বিভাগ থেকেই কল আসে। গত ১৮ দিনে সবচেয়ে বেশি কল এসেছে ঢাকা বিভাগ থেকে। মোট কলের ৪৪ শতাংশ এসেছে এই বিভাগ থেকে। ঢাকার পর সবচেয়ে বেশি, ২০ শতাংশ কল এসেছে চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে। কল আসার হার সবচেয়ে কম সিলেট বিভাগ থেকে, ৩ শতাংশ। খুলনা ও বরিশাল বিভাগ থেকে এসেছে যথাক্রমে ৮ ও ৬ শতাংশ। রাজশাহী ও রংপুরের কলের হার সমান, ৭ শতাংশ। বাকি ৫ শতাংশ কল আসে ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে।