করোনা-আক্রান্তদের চিকিৎসায় সব হাসপাতাল প্রস্তুত নয়

প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় করোনা–আক্রান্ত রোগীদের অন্য হাসপাতালে যাওয়ার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গতকাল মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে।  প্রথম আলো
প্রস্তুতি শেষ না হওয়ায় করোনা–আক্রান্ত রোগীদের অন্য হাসপাতালে যাওয়ার বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গতকাল মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে। প্রথম আলো

‘সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক এই হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের জরুরি চিকিৎসাব্যবস্থা সংযোজনের প্রক্রিয়া চলছে। এখনো হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসাব্যবস্থা চালু হয় নাই। সুতরাং করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অথবা করোনাভাইরাস সংক্রমণের সন্দেহভাজন রোগীদেরকে সরকারঘোষিত অন্য হাসপাতালে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হইল।’

‘জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে’ ওপরের এই বিজ্ঞপ্তিটি সাঁটানো হয়েছে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের প্রধান ফটকে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য রাজধানী ও বিভাগীয় শহরে যে কয়টি হাসপাতাল সরকার নির্ধারণ করেছে, এ হাসপাতালটি তার একটি। 

রাজধানীতে এখন মূলত কুয়েত–বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা হচ্ছে। এর বাইরে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতাল, রিজেন্ট হাসপাতাল উত্তরা ও মিরপুর এবং যাত্রাবাড়ীর সাজিদা ফাউন্ডেশনে করোনা–আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, দুটির প্রস্তুতি প্রাথমিক পর্যায়ে, আরেকটি মোটামুটি প্রস্তুত। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে কয়েকটি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেগুলোও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়। 

চিকিৎসকেরা বলছেন, চিকিৎসক ও নার্সদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পারসোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট—পিপিই) পর্যাপ্ত পরিমাণে পৌঁছায়নি। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) ও কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়ার সুবিধা বা ভেন্টিলেশন জরুরি। কিন্তু নির্ধারিত হাসপাতালগুলোর সবগুলোতে এসব সুবিধা নেই।

>চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী স্বল্পতা আছে। ভেন্টিলেশন, আইসিইউর ঘাটতি রয়েছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের নির্দেশনায় বলেছে, হাসপাতালগুলোতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এ ছাড়া হাসপাতালগুলোকে ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রী ও কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস যন্ত্রের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল শাখা) আমিনুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, শুধু করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় রাজধানীতে আটটি হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বাইরে ঢাকা মেডিকেল, মুগদা জেনারেল, কুর্মিটোলা, সোহরাওয়ার্দী ও সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে আলাদা শয্যা রয়েছে। কুয়েত–বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল পুরোদমে কাজ শুরু করেছে। মহানগর জেনারেল হাসপাতালের বহির্বিভাগ চালু হয়েছে। গ্যাস্ট্রোলিভারসহ অন্যগুলো এ সপ্তাহে চালু হবে। 

গতকাল সোমবার বিকেলে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে গিয়ে অনেকটা ফাঁকা দেখা যায়। নরসিংদী থেকে তারান্নেসা এসেছিলেন লিভারের সমস্যা নিয়ে। তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। তাঁকে জানানো হয়েছে, এখানে করোনার চিকিৎসা হবে। অন্য রোগী এখন নেওয়া হবে না। 

হাসপাতাল সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে। গ্যাস্ট্রোলিভারের রোগীদের নতুন করে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। তবে গতকাল পর্যন্ত বেশ কয়েকজন গ্যাস্ট্রোলিভারের রোগী ভর্তি ছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু করতে আরও বেশ কয়েক দিন লাগতে পারে। ২৫০ শয্যার এই হাসপাতালটিতে আটটি আইসিইউ শয্যা আছে।

শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের পরিচালক ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। প্রস্তুত হয়ে গেলে চিকিৎসা শুরু হবে। চিকিৎসকদেরও প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। গত রোববার রাতে তাঁরা কিছু পিপিই পেয়েছেন। তবে তা পর্যাপ্ত নয়, আরও পিপিই লাগবে।

রাজধানীর মিরপুরের লালকুঠিতে অবস্থিত ২০০ শয্যার মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য হাসপাতালকে (লালকুঠি হাসপাতাল) করোনা চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হবে। এটি মূলত পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের নতুন হাসপাতাল। এখনো সেভাবে লোকবল নিয়োগ করা হয়নি। করোনার চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ লোকবল দিয়েছে। তাঁদের সবাই এখনো যোগ দেননি। ক্লিনার, আয়া বা সহায়তাকারী লোকবল নেই। গতকাল দুপুরে হাসপাতালটিতে গিয়ে মোটামুটি ফাঁকা দেখা যায়। ছয়তলার একটি কক্ষে চিকিৎসক ও নার্সদের করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসাবিষয়ক প্রশিক্ষণ চলছে। 

হাসপাতাল সূত্র জানায়, এতে ২০০টি শয্যা আছে। তবে কোনো আইসিইউ ইউনিট নেই। ভেন্টিলেশনের সুবিধাও নেই। শ্বাসতন্ত্রের রোগী এলে কে নেবেন বা কীভাবে নেওয়া হবে—এসব এখনো ঠিক হয়নি।

 হাসপাতালের পরিচালক শামছুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের হাসপাতালে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু হয়নি। এটি এখনো প্রস্তুতির পর্যায়ে আছে। লোকবল পর্যাপ্ত নয়। প্রথমে বহির্বিভাগের কার্যক্রম চালু করা হবে। তবে কবে নাগাদ চালু করা যাবে, তা লোকবল পাওয়ার ওপর নির্ভর করছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ১৮ জন চিকিৎসক ও ৩০ জন নার্স নিয়োগ দিয়েছে। গতকাল পর্যন্ত ১২ জন চিকিৎসক ও ২৫ জন নার্স যোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, তাঁদের ৩০টি পিপিই দেওয়া হয়েছে। তবে আরও পিপিই আসবে।

রাজধানীর রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরায় দুটি শাখায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। ৫০ শয্যার মিরপুর শাখায় এখনো চিকিৎসা শুরু হয়নি। তাদের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। গতকাল পর্যন্ত ৫০টি পিপিই তারা পেয়েছে, আরও আসবে বলে তাদের জানানো হয়েছে।

 ঢাকার বাইরে পরিস্থিতি

রাজশাহীতে আইসোলেশন (বিচ্ছিন্ন করা) ইউনিট হিসেবে ৩০ শয্যার রাজশাহী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল ও ১০ শয্যার কুষ্ঠ নিরাময় কেন্দ্রকে প্রস্তুত করা হয়েছে। এখানে তিনজন চিকিৎসকের মধ্যে আছেন দুজন। নার্স দেওয়া হয়েছে সাতজন। 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপতালের একজন সিনিয়র স্টাফ নার্সের করোনার উপসর্গ দেখা দিলে গত শনিবার তাঁকে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে পাঠানো হয়। সেখানকার অবস্থা দেখে তিনি ভর্তি না হয়ে নিজের বাসায় কোয়ারেন্টিনে (সংগনিরোধ) চলে যান। তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়নি। এ ছাড়া গত রোববার রাতে সর্দিজ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪৬ বছর বয়সী এক রোগীকে হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়। এই দুই রোগী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কি না, তা পরীক্ষা করতে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বলেন, আইসোলেশন ইউনিটের চিকিৎসক ও নার্সদের সুরক্ষা পোশাক ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তবে সেখানে ভেন্টিলেটর, আইসিইউ ও কেন্দ্রীয়ভাবে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। কিট সরবরাহ নেই। তবে অক্সিজেনের সিলিন্ডার রয়েছে। 

চট্টগ্রামের জেনারেল হাসপাতাল ও সীতাকুণ্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত। এই দুই হাসপাতালে আইসোলেশন ইউনিট করা হয়েছে। তবে আইসিইউ নেই। এর পাশাপাশি রেলওয়ে বক্ষব্যাধি হাসপাতালেও ৩৭ শয্যার একটি ইউনিট তৈরি করা হয়েছে।

বিআইটিআইডির পরিচালক এম এ হাসান চৌধুরী বলেন, কিছু রোগীর আইসিইউ দরকার হতে পারে। এ জন্য ঢাকায় আইসিইউ চাওয়া হয়েছে। হয়তো পাওয়া যাবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে কিট যাওয়ার কথা থাকলেও গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে কোনো কিট পৌঁছায়নি। চিকিৎসকদের সুরক্ষা সরঞ্জামেরও ঘাটতি আছে। 

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন সেখ ফজলে রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, পিপিই মোটামুটি চলে এসেছে। আরও কিছু দিতে বলা হয়েছে। 

 খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট প্রস্তুত করা হয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সদের বিশেষ সুরক্ষা পোশাক দেওয়া হলেও যে মাস্ক দেওয়া হয়েছে, তা নিম্নমানের বলে অভিযোগ আছে। হাসপাতালের পরিচালক এ টি এম মঞ্জুর মোর্শেদ বলেন, হাঁচি, কাশি, শ্বাসকষ্ট রোগীদের চিকিৎসার জন্য বহির্বিভাগে আলাদা কর্নার খোলা হয়েছে। সেখান থেকে সেবা নিয়ে রোগীরা বাড়ি চলে যাবেন।

খুলনা সিভিল সার্জন সুজাত আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, নগরের মীরেরডাঙ্গায় অবস্থিত সংক্রমণ ব্যাধি হাসপাতালটিকেও আইসোলেশন ইউনিট করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এর জন্য যে ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন, তা করতে হবে গণপূর্ত বিভাগকে। পূর্ত বিভাগ জানিয়েছে, পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ পেলে তারা কাজটি করবে।

বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বর্ধিত নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ২০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট করা হয়েছে। প্রয়োজনে এটিকে ২০০ শয্যার করার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। আইসোলেশন ইউনিটের জন্য আলাদা দল গঠন করা হয়েছে। তাঁদের সুরক্ষা সরঞ্জামও দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়নি। আইসোলেশন ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসার বিষয়ে অনলাইনে প্রশিক্ষণের জন্য গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, জরুরি বিভাগের চিকিৎসক-নার্সদের শুধু মাস্ক ও গ্লাভস দেওয়া হয়েছে। আইসোলেশন ইউনিটে আলাদা অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়নি। হাসপাতালে বিদ্যমান অক্সিজেন থেকে এখানে কিছু সরবরাহ করা হয়েছে। বাড়তি অক্সিজেন সিলিন্ডার চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া হাসপাতালের আইসিইউএর ১০টি ভেন্টিলেশনের দুটি অকেজো। জ্বর, সর্দি, কাশি রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের নতুন ভবনের নিচতলায় একটি হাঁচি-কাশি কর্নার আজ থেকে চালু হওয়ার কথা আছে।

সিলেটে করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত ১০০ শয্যার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) নেই। নেই ভেন্টিলেটর। তবে হাসপাতালে অক্সিজেনের সরবরাহ রয়েছে। চিকিৎসার জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের শিশির রঞ্জন চক্রবর্তীকে প্রধান করে চিকিৎসা পর্যবেক্ষণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত শুক্রবার চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তা সরঞ্জাম (পিপিই) সরবরাহ করা হয়েছে। জ্বর, সর্দিকাশি ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের জন্য আলাদা একটি কর্নার চালু করা হয়েছে।

শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা (আরএমও) সুশান্ত কুমার মহাপাত্র বলেন, হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট ও ভেন্টিলেটর যন্ত্র আনার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নির্মাণাধীন ভৈরব ট্রমা সেন্টারে ৬০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট খোলা হয়েছে। চিকিৎসকেরা জানান, অবকাঠামো ও শয্যাগত দিক দিয়ে প্রস্তুত থাকলেও এই সেন্টারে করোনায় আক্রান্ত কোনো রোগীর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ ইউনিট পরিচালনা করার মতো প্রশিক্ষিত জনবল, সুরক্ষা উপকরণ, আইসিইউর সুবিধা নেই।

আইসোলেশন ইউনিটটিকে এখন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন সেন্টার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বর্তমানে এখানে ১৪ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন। প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের পরিচর্যা করতে গিয়েও নানা সমস্যায় পড়ছেন চিকিৎসকেরা। বিশেষ করে ইউনিটে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তাসামগ্রী—বিশেষায়িত গাউন, জুতা, মাস্ক, চশমা না থাকায় কর্মরতরা শঙ্কায় আছেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ বলেন, বড় সমস্যা মোকাবিলা করতে বড় জোগান প্রয়োজন। করোনার মতো স্পর্শকাতর সমস্যা মোকাবিলা খালি হাতে কোনোমতেই সম্ভব নয়। 

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুশতাক হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধের বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ জন্য প্রশিক্ষণ যেমন গুরুত্বপূর্ণ, হাসপাতাল কাঠামোও গুরুত্বপূর্ণ। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা থাকতে হবে। পরিবেশের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাসপাতাল পরিষ্কার রাখা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনাও এর মধ্যে পড়ে। 

(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা)