কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে মাত্র ১০ শয্যার কোয়ারেন্টিন

বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ও সবচেয়ে বড় হাসপাতালটিতে মাত্র ১০টি শয্যা বরাদ্দ রাখা হয়েছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের জন্য। আইসোলেশনের কোনো ব্যবস্থা নেই। হাসপাতালে চিকিৎসাসেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের নিরাপত্তা সরঞ্জামেও সংকট আছে।

হাসপাতালটি হচ্ছে রাজধানীর রাজারবাগের কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতাল (সিপিএইচ)। ১৯৫৪ সালে যাত্রা শুরু করা এই হাসপাতাল পুলিশ সদস্যরা এখানে বিনা মূল্যে চিকিৎসা ও ওষুধ পান। এখন এই হাসপাতালে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ জন জ্বর বা সর্দি-কাশি নিয়ে আসছেন। তাঁদের মধ্যে সাধারণ মানুষও আছেন।

বিশেষায়িত এ হাসপাতালটি এখন ২৫০ শয্যার, চিকিৎসক আছেন ১২০ জন। সরকারের নির্দেশে সিপিএইচ ভবনের নবম তলায় পুলিশ সদস্যদের জন্য ১০ শয্যার কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা মহানগর পুলিশেই প্রায় ৩৪ হাজার সদস্য আছেন। মাঠপর্যায়ে কাজ করার সময় করোনা প্রতিরোধেও তাঁদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এখন জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে যাঁরা হাসপাতালে আসছেন, তাঁদের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) নির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখনো কেউ করোনা সন্দেহে ভর্তি হননি।

তবে পরিস্থিতি খারাপ হলে একটি ব্যারাক খালি করে পুলিশ সদস্যদের জন্য আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী এই বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে সিপিএইচের তত্ত্বাবধায়ক মো. মনোয়ার হাসানাত খান গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ সদস্যদের আইসোলেশনে রাখার দরকার হলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল ও উত্তরায় বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে পাঠানো হবে।

মনোয়ার হাসানাত বলেন, হাসপাতালে ব্যক্তিগত নিরাপত্তাসামগ্রী (পারসোনাল প্রোটেকশন ইকুইপমেন্ট—পিপিই) বিশেষায়িত গাউন, মাস্ক, জুতা, বিশেষ ধরনের চশমার সংকট আছে। তবে কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসাসেবার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত থাকবেন, তাঁদের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছু নিরাপত্তাসামগ্রীর ব্যবস্থা করে রেখেছে।

পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসার জন্য পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট, যেমন পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম), পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও স্পেশাল প্রোটেকশন ব্যাটালিয়নে (এসপিবিএন) একজন করে চিকিৎসক কর্তব্যরত আছেন। বর্তমান পরিস্থিতিতে তাঁরা সিপিএইচের হটলাইনে যোগাযোগ করে চিকিৎসা দিচ্ছেন।

ডিএমপি সূত্র জানায়, দাঙ্গা দমনের জন্য ডিএমপির মিরপুর ১৪ নম্বরে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে ব্যারাক আছে। এ দুটি ব্যারাকে প্রায় ১০ হাজার পুলিশ সদস্য থাকেন।

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রুখতে ব্যারাক দুটিতে কী ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে, জানতে চাইলে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) মীর রেজাউল আলম প্রথম আলোকে বলেন, যদি ব্যারাকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়, প্রয়োজনে একটি ব্যারাক খালি করে সেখানে পুলিশ সদস্যদের জন্য আইসোলেশনের ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের জন্য নিরাপত্তাসামগ্রী তৈরি হচ্ছে।