শেখ রাসেলে প্রস্তুত হচ্ছে আইসিইউ ইউনিট

শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। ছবি: সামছুর রহমান
শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউ বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। ছবি: সামছুর রহমান

করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) ইউনিট প্রস্তুত করছে রাজধানীর মহাখালীতে অবস্থিত শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল। এই ইউনিটে আটটি শয্যা থাকবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আইসিইউ ইউনিটটি পুরো প্রস্তুত করতে দুই থেকে তিন দিন লাগবে।

আইসিইউ সুবিধাসহ হাসপাতালের পুরো চিকিৎসা কার্যক্রম আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে চালু করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের পরিচালক ফারুক আহমেদ। তিনি জানান, আইসিইউর আটটি শয্যা নিশ্চিত চালু হবে। আইসিইউর পাশে আট শয্যার একটি হাইডিপেন্ডেন্সি ইউনিট (এইচডিইউ) রয়েছে। এই আটটি শয্যাতেও আইসিইউ শয্যা চালুর বিষয়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য রাজধানীতে আটটি হাসপাতাল নির্ধারণ করা হয়েছে। রাজধানীতে এখন মূলত বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা হচ্ছে। এর বাইরে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, রেলওয়ে হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর লালকুঠি হাসপাতাল, রিজেন্ট হাসপাতাল উত্তরা ও মিরপুর এবং যাত্রাবাড়ীর সাজেদা ফাউন্ডেশনে করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত করা হয়েছে।

আজ শনিবার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিচতলায় আইসিইউর শয্যার বিভিন্ন অংশ জোড়া দেওয়ার কাজ চলছে। লেভেল-৫-এ হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিট করা হচ্ছে। সেখানে কৃত্রিমভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়ার যন্ত্রপাতি বসানো হচ্ছে। কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সরবরাহ লাইনের সঙ্গে সংযোগ দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) ও কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়ার সুবিধা বা ভেন্টিলেশন জরুরি। কিন্তু নির্ধারিত হাসপাতালগুলোর সবগুলোতে এসব সুবিধা ছিল না। সরকার হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ বসানোর কাজ শুরু করেছে।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুতি চলছে। এখানে আগে থেকে ১৪০ শয্যার সাধারণ ওয়ার্ড ও কেবিন চালু ছিল। সেগুলোতে গ্যাস্ট্রোলিভারের রোগীদের নতুন করে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। তবে এখনো গ্যাস্ট্রোলিভারের বহির্বিভাগ চালু রাখা হয়েছে।
দেখা যায়, লেভেল-৬-এ অবস্থিত হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডগুলো ফাঁকা করা হয়েছে। হাসপাতালের কর্মীরা সাধারণ ওয়ার্ডের শয্যাগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে প্রস্তুত করছেন। এখন করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে কোনো রোগী এলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের পরিচালক ফারুক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় কিছুটা দূরত্ব রাখতে হয়। তাই কিছু শয্যা কমিয়ে ১৬০ থেকে ১৭০টি শয্যা করোনাভাইরাস আক্রান্তদের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এই হাসপাতালে এখনো করোনাভাইরাস শনাক্তকরণের ব্যবস্থা নেই। তবে এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর অনলাইনে হাসপাতালের কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেছে। ফারুক আহমেদ বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্তদের নমুনা পরীক্ষা, চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। এখানে নমুনা পরীক্ষার বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি।