নালিতাবাড়ীতে করোনার উপসর্গ নিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার দক্ষিণ পলাশীকুড়া গ্রামে আবদুল আওয়াল (৫৫) নামের এক দিনমজুর জ্বর, সর্দি ও শ্বাসকষ্ট দিয়ে গতকাল রোববার রাতে মারা গেছেন। করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ায় এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি লোকজনকে মৃত ব্যক্তির বাড়িতে ভিড় না করতে সতর্ক করছেন।

তবে বিষয়টি নিশ্চিত হতে শেরপুরের সিভিল সার্জন এ কে এম আনওয়ারুর রউফ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুর রহমান আজ সোমবার সকাল সাড়ে নয়টায় ওই বাড়িতে যান। তাঁরা আধা ঘণ্টা ঘটনাস্থলে অবস্থান করেন। এ সময় মৃত ব্যক্তির স্ত্রী ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ঘটনা জানার চেষ্টা করেন তাঁরা।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আবদুল আওয়ালসহ এলাকার পাঁচজন ১৫ দিন আগে বাগেরহাটের রামপাল উপজেলায় সেতুর পাইলিং মেরামতের শ্রমিক হিসেবে কাজে যান। গত বৃহস্পতিবার সরকারি নির্দেশে সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত ও সব ধরনের গণজমায়েত বন্ধ হলে সেদিনই জ্বর-সর্দি-শ্বাসকষ্ট নিয়ে আবদুল আওয়াল বাড়ি ফেরেন। অসুস্থতার বিষয়টি তিনি কাউকে না জানিয়ে বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। গতকাল রাত সাড়ে আটটার দিকে তিনি মারা গেলে বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়।

মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকাবাসী লাশ দেখতে বাড়িতে ভিড় করেন। পরে পোড়াগাও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. নুরুল হক করোনায় ওই দিনমজুরের মৃত্যু হতে পারে বলে সবাইকে সতর্ক করেন। আজ বেলা ১১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় ওই বাড়িতে শুধু আবদুল আওয়ালের স্ত্রী ছিলেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল হক আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনার উপসর্গ নিয়ে যেহেতু আবদুল আওয়ালের মৃত্যু হয়েছে, তাই কাউকে ওই বাড়িতে যেতে নিষেধ করেছি। ইউএনও স্যার ও সিভিল সার্জন এসে বিষয়টি তদন্ত করবেন।’

জানতে চাইলে ইউএনও আরিফুর রহমান বেলা ১১টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘করোনার উপসর্গ নিয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে ইউপি চেয়ারম্যান জানিয়েছিলেন। বিষয়টি তদন্তে সিভিল সার্জনকে নিয়ে সকাল সাড়ে নয়টায় ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। মৃত ব্যক্তির স্ত্রী আমাদের জানিয়েছেন, আবদুল আওয়ালের জ্বর-সর্দি ছিল না। শুধু আগে থেকে শ্বাসকষ্ট ছিল।’

তারপরও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে জানিয়ে ইউএনও বলেন, নমুনা আইইডিসিআরে পাঠানো হবে। সেখান থেকে প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত ওই বাড়িসহ আশপাশের বাড়ির বাসিন্দাদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর গোসল করানো ছাড়াই লাশ প্লাস্টিকে মুড়ে দাফন করতে বলা হয়েছে। প্রকৃত ঘটনা কী, তা আইইডিসিআর থেকে প্রতিবেদন এলেই কেবল জানা যাবে।