ফোন পেয়ে দিনমজুরের ঘরে ত্রাণ পৌঁছাল জেলা প্রশাসন

মিনু আক্তার ও স্বামী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত
মিনু আক্তার ও স্বামী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের প্রভাবে সবকিছু প্রায় বন্ধ। সাত দিন ধরে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন স্বামী মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। ফুরিয়ে গেছে বাসার সব খাবার। ফলে খাদ্যাভাবে দুদিন ধরে বন্ধ রয়েছে বাসার উনুন। খিদের জ্বালায় সমানে কেঁদে যাচ্ছিল ছোট সন্তান আর নাতি। এমন পরিস্থিতিতে কোনো উপায় না দেখে মিনু আক্তার ফোন দেন ৩৩৩ তথ্যসেবা নম্বরে। এর এক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর বাসায় ত্রাণ নিয়ে হাজির হন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

এই ঘটনা ঘটেছে গত রোববার রাত ১১টায়। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোর কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. তৌহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নগরের বায়েজিদের খাজা গরীবে নেওয়াজ লেনে ভাড়া বাসায় স্বামী, তিন সন্তান, ছেলের স্ত্রী আর নাতি নিয়ে থাকেন মিনু আক্তার। চলমান দুর্যোগ পরিস্থিতিতে স্বামী কর্মহীন হওয়ায় পরিবারের আয় নেই। বড় ছেলেও কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। সব খাবার ফুরিয়ে যাওয়ায় রোববার দুপুর ও রাতে তাঁরা কিছুই খেতে পারেননি। এমন পরিস্থিতিতে নিরুপায় হয়ে মিনু আক্তার রোববার রাত ১০ টায় ৩৩৩ তথ্যসেবা নম্বরে ফোন দেন।

তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মিনু আক্তারের কষ্টের কথা জেনে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন তাৎক্ষণিকভাবে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ কামাল হোসেন এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সজীব চক্রবর্তীকে নির্দেশ দেন মিনু আক্তারের খাদ্যসামগ্রী সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার জন্য। এরপর রাত প্রায় ১১টার সময় জেলা প্রশাসক চট্টগ্রামের নির্দেশে ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মিনু আক্তারের বাসায় হাজির হয়ে ৩৩ কেজি ত্রাণ (২০ কেজি চাল, ৪ কেজি চিড়া, ২ কেজি ডাল, ২ কেজি লবণ, ২ কেজি চিনি, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি নুডলস) তুলে দেন।

মধ্যরাতে এ রকম মানবিক সাহায্য পেয়ে জেলা প্রশাসকসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান মিনু আক্তার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামী বাবুর্চির কাজ করতেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে হোটেল বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। একই কারণে ছেলেও কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এর ফলে খুব কষ্টে দিন কাটছিল।

মিনু আক্তার বলেন, ‘মসজিদে বিলি করা একটি সচেতনতামূলক কাগজে তথ্যসেবার নম্বরটি পেয়েছিলাম। কোনো উপায় না দেখে সাহস করে সেটিতে ফোন দিলাম। এত দ্রুত ত্রাণ পেয়ে যাব, কল্পনা করিনি। সত্যিই অনেক খুশি হয়েছি।’