হোম কোয়ারেন্টিনে 'বাল্যবিবাহ'

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার একটি গ্রামে হোম কোয়ারেন্টিনে (বাড়িতে সঙ্গনিরোধ) থাকা এক কিশোরী ও তরুণের বিবাহ হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার সংশ্লিষ্ট পরিবার ও এলাকাবাসী সূত্রে এ খবর জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, এক ব্যক্তি স্ত্রী ও ছেলে নিয়ে বছরের অধিকাংশ সময় কাজের জন্য অবৈধভাবে ভারতের উত্তর প্রদেশে বসবাস করেন। সম্প্রতি ওই পরিবারের তিন সদস্য ভারত থেকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গ্রামের বাড়িতে আসেন। ভারত থেকে আসার সময় তাঁরা এক কিশোরীকে (১৬) সঙ্গে নিয়ে এসেছেন। স্থানীয় গ্রাম পুলিশ ওই বাড়িতে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেয় এবং তাঁদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলে। ওই কিশোরীর বিষয়ে এলাকাবাসী জানতে চাইলে ওই ব্যক্তি দাবি করেন, ওই কিশোরী তাঁর পুত্রবধূ। তাঁর দাবি মেনে নেয়নি এলাকাবাসী। পরে গত রোববার রাত নয়টার দিকে ওই ব্যক্তির ২২ বছরের ছেলের সঙ্গে ১৬ বছরের কিশোরীর বিবাহ দেওয়া হয়। বিয়ে ও খাবার অনুষ্ঠানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান বি এম রায়হান বিশ্বাস, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোর্শেদসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ওই ব্যক্তি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ভারত থেকে আসার পর ১৪ দিন বাড়ি থেকে বের না হতে বলা হয়েছে তাঁদের। তবে স্থানীয় লোকজন ভারত থেকে নিয়ে আসা পুত্রবধূকে নিয়ে প্রশ্ন তোলে। একপর্যায়ে ২৯ মার্চ তিনি স্থানীয় নিকাহ রেজিস্ট্রার আনিছুর রহমানকে ডেকে নিয়ে আবার বিয়ে পড়ান।

স্থানীয় দফাদার সঞ্জয় কুমার বলেন, করোনাভাইরাস সম্পর্কে তাঁদের সচেতনতার পরামর্শ দিয়ে ২৬ মার্চ লাল পতাকা টাঙানোর সময় তাঁরা অঙ্গীকার করেন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকবেন। কিন্তু তা না মেনে ২৯ মার্চ রাতে স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ওই বাড়িতে বিয়ের ঘটনা ঘটেছে।

নিকাহ রেজিস্ট্রার আনিসুর রহমানের দাবি, তাঁকে মুঠোফোনে বিয়ে পড়াতে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু তিনি বলে দিয়েছিলেন ৪ এপ্রিলের আগে বিয়ে পড়াতে পারবেন না। তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য দাবি করেন, বিয়ে পড়িয়েছেন নিকাহ রেজিস্ট্রার আনিছুর রহমান। তবে তা রেজিস্ট্রারে তোলেননি তিনি।

ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা অস্বীকার করে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম মোর্শেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছেলে ও মেয়ের এখনো বয়স হয়নি। বিয়ে দেবে কে? ওরা ভারত থেকে বিয়ে করে এসেছে।’