দরজা খুলে দেখছেন, ঘরের সামনে খাবার

দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম শ্রমজীবীদের ঘরের সামনে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ছবি: প্রথম আলো
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম শ্রমজীবীদের ঘরের সামনে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। ছবি: প্রথম আলো

ভোররাতের দিকে দিনাজপুরের কর্মহীন মানুষের ঘরের দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ। আধো ঘুম চোখে নিয়ে দরজা খুলতেই তাঁরা দেখছেন, খাবারসামগ্রী নিয়ে জেলা প্রশাসনের কেউ দাঁড়িয়ে আছেন। এতে আছে ১০ কেজি চাল, ৫ কেজি আলু ও এক কেজি ডাল।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে চলাচল সীমিত করায় বিপদে পড়া শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম। আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে জেলা প্রশাসক ও অন্যান্য কর্মকর্তা– কর্মচারীদের ৬টি দল দিনাজপুরে শহরের বড় বন্দর, ক্ষেত্রীপাড়া, রাজবাটি সবুজবাগান, সর্দারপাড়া, কালিতলা, উপশহরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেয়।

জেলা প্রশাসন বলছে, খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালে একজন যাতে আরেকজনের কাছাকাছি আসতে না পারেন, সে জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

এর আগে জেলা প্রশাসন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কর্মহীন ও দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার করে আহ্বান জানায়। সেখানে অনেক জায়গায় সাহায্য দেওয়ার আবেদন আসে। জমা হওয়া আবেদনগুলো প্রশাসন যাচাই–বাছাই করে তালিকা প্রস্তুত করে। সেই তালিকা অনুযায়ী, প্রথম সপ্তাহের খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

খাবার পেয়ে বড় বন্দর এলাকার মো. মোতাহার হোসেন বলেন, 'বাসায় মজুত যা ছিল, ৩ দিন হলো শেষ হয়েছে। পরিবারে ৪ জন মানুষ আমরা। ধার–দেনা করে চলছিলাম। সরকারকে ধন্যবাদ। আমাদের খোঁজ রাখছে, খাবার দিয়ে যাচ্ছে।'

জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল আলম বলেন, 'প্রাথমিকভাবে ৫০০টি হতদরিদ্র পরিবারের তালিকা করে আমরা খাবার পৌঁছে দিলাম। আরও কিছু আবেদন জমা পড়েছে। সেগুলো যাচাই–বাছাই করে খাবার দেওয়া হবে। খাবারের জন্য কাউকে কষ্ট করতে হবে না।' এই ক্রান্তিকালে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।