করোনা হেল্প ডেস্কে মিলছে চিকিৎসা-পরামর্শ-ওষুধ

করোনা হেল্প ডেস্কে চিকিৎসা ও পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ছবি: সংগৃহীত
করোনা হেল্প ডেস্কে চিকিৎসা ও পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। ছবি: সংগৃহীত

একদল চিকিৎসকের উদ্যোগে গড়ে উঠেছে করোনা হেল্প ডেস্ক। মুঠোফোন, হোয়াটসঅ্যাপ, স্কাইপ, ই-মেইলসহ ডিজিটাল মাধ্যমে রোগের উপসর্গ শুনে, স্কাইপেতে কথা বলে এবং আগের রোগসংক্রান্ত রিপোর্ট থাকলে তা দেখে শতাধিক চিকিৎসক (বেশির ভাগই বেসরকারি হাসপাতালে কর্মরত) চিকিৎসা অথবা পরামর্শ দিচ্ছেন। রোগীকে যথাযথ জায়গায় রেফার করা বা টেলিফোন নম্বর দিয়ে সহায়তাও করছেন চিকিৎসকেরা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই চিকিৎসকদের মুঠোফোন নম্বর দেওয়া আছে। কেউ ২৪ ঘণ্টা, কেউ সকাল-বিকেল, কেউ সন্ধ্যা-রাত, এভাবে সময় ভাগ করে নিয়েছেন।

বেসরকারি সংগঠন হিউম্যান এইড বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গত ২১ মার্চ থেকে এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংগঠনটি ২০০৯ সাল থেকে স্বাস্থ্যসেবা, রক্তদান কার্যক্রম, নিরাপদ পরিবেশসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করছে।

ফাউন্ডেশনের পক্ষে গত ২৭ মার্চ থেকে শুধু রাজধানীতে পাঁচজন স্বেচ্ছাসেবক যথাযথ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা মেনে কেউ যদি চান তাঁর বাড়িতে সংশ্লিষ্ট ওষুধও পৌঁছে দিচ্ছেন। ওষুধের বাজারে যে দাম সে দাম রেখে বিনা মূল্যে ওষুধ বিতরণের কাজটি করা হচ্ছে।

সংগঠনটির প্রেসিডেন্ট কিডনি ফাউন্ডেশন হাসপাতালের চিকিৎসক শেখ মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম বললেন, করোনাভাইরাসের বিস্তারে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। জ্বর, কাশি, সামান্য গলাব্যথা হলেও উদ্বিগ্ন হয়ে যাচ্ছে মানুষ। বেশির ভাগ ফোন আসছে উদ্বেগ থেকেই। করোনাভাইরাসসংক্রান্ত ছাড়া অন্যান্য রোগের জন্যও প্রচুর ফোন আসছে। রোগের উপসর্গ করোনার সঙ্গে মিলে গেলে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের নম্বর দিয়ে করোনা পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

করোনা হেল্প ডেস্কের উদ্যোগ প্রসঙ্গে মইনুল ইসলাম বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়িয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং নগরবাসীকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। অনেক সময় ফার্মেসিতেও প্যারাসিটামলসহ বিভিন্ন ওষুধ পাচ্ছেন না ভুক্তভোগীরা। আর শুধু আতঙ্কের কারণে হাসপাতালে যাওয়ারও প্রয়োজন নেই। রোগীকে একটু সময় দিলে ডিজিটাল মাধ্যমেই তার সমস্যার সমাধান করা যাচ্ছে। যেসব ক্ষেত্রে হাসপাতালে যেতেই হবে, সেসব ক্ষেত্রে হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এতে করে নগরবাসী ঘরে থাকতে পারছে, অন্যদিকে হাসপাতালেও ভিড় কমানো সম্ভব হচ্ছে। সারা দেশ থেকেই দিনে-রাতে অসংখ্য ফোন পাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

আজ বৃহস্পতিবার বেসরকারি সংগঠনে কর্মরত সানজিদা খান ফেসবুকে একটি সমস্যার কথা উল্লেখ করে অন্ততপক্ষে ভিডিও কলে কথা বলে কোনো চিকিৎসক কোনো পরামর্শ দিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে একটি পোস্ট দেন। পরে সানজিদা প্রথম আলোকে জানান, তাঁর এক পরিচিতের মাধ্যমে হিউম্যান এইড বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের এক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেন। ওই চিকিৎসক প্রাথমিকভাবে একটি ওষুধ খেতে বলেছেন এবং কিছু পরামর্শ দিয়েছেন, আপাতত সে অনুযায়ী চলছে।

এম এ খায়ের নামের একজন গত ২৯ মার্চ ‘একটি উপকার স্বীকার’ শিরোনামে ফেসবুকে একটি লেখা লিখেছেন। মেয়ের শ্বাসকষ্ট শুনে দেশের বড় বড় হাসপাতালও এই মুহূর্তে চিকিৎসা করতে পারবে না বলে জানিয়ে দেয়। অথচ মেয়ের অ্যালার্জির কারণে এ শ্বাসকষ্ট ছিল। পরে তিনিও ফাউন্ডেশনের চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে প্রতিকার পান, মেয়ে বর্তমানে সুস্থ আছে।

হিউম্যান এইড বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের কয়েকজন চিকিৎসকের মুঠোফোন নম্বর:
শেখ মোহাম্মদ মইনুল ইসলাম: ০১৭১১১৫৪৩৫৬
আয়েশা হোসেন সাদিয়া: ০১৭০১৬১৮০৮০
আবেদা নওশী: ০১৬৭২০৪৫৩৭৯
লিপন কুমার রায়: ০১৬৮০০৭৭৭৬৮
ইউশা আনসারী: ০১৪০৭০৫৯৫৭২
নাফিসা ইসলাম: ০১৬৭২৯২২১৪০