শরীয়তপুরে মারা যাওয়া যুবক করোনায় আক্রান্ত নন

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে গত মঙ্গলবার রাতে মারা যাওয়া রফিকুল ইসলামের (৩৫) শরীরে করোনাভাইরাসের আলামত পাওয়া যায়নি। আজ শুক্রবার আইইডিসিআর থেকে ওই পরীক্ষার ফল শরীয়তপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে এসেছে।

শরীয়তপুরের সিভিল সার্জন আবদুল্লাহ আল মুরাদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে যক্ষ্মায়। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ওই রোগে ভুগছিলেন। সতর্কতার অংশ হিসেবে তাঁর মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছিল। আজ শুক্রবার সকালে ই–মেইলের মাধ্যমে আইইডিসিআর থেকে ফল পাঠানো হয়েছে। ওই ফল নেগেটিভ এসেছে। এ ছাড়া শরীয়তপুর থেকে আরও ১০ ব্যক্তির নমুনা আইইডিসিআরে পাঠানো হয়েছিল। সবার ফলই নেগেটিভ এসেছে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নড়িয়া উপজেলার মোক্তারেরচর ইউনিয়নের চেরাগ আলী ব্যাপারীকান্দি গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলামকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর স্বজনেরা। জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট থাকায় তাঁকে আইসোলেশন ইউনিটে রাখা হয়। রাত সাড়ে নয়টার দিকে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মচারীদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়ে। এ পরিস্থিতিতে বুধবার মরদেহের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়।

আইইডিসিআরের পরামর্শে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী বুধবার ওই যুবককে দাফন করা হয়। তবে প্রথমে তাঁর লাশ দাফনে বাধা সৃষ্টি করেন নড়িয়ার চণ্ডীপুর ও পাঁচগাঁও গ্রামবাসী। পরে নড়িয়া থানার পুলিশের হস্তক্ষেপে চণ্ডীপুর কবরস্থানে দাফন শেষ করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন রফিকুল ইসলামের পরিবারসহ পাঁচটি পরিবারের ২৩ সদস্যকে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সৌমিত্র সরকার বলেন, ওই যুবক বালু উত্তোলনের একটি খননযন্ত্রের শ্রমিক ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন জ্বর, ঠান্ডা ও কাশিতে ভুগছিলেন। গত ২১ মার্চ তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন। তখন কফ, রক্ত, এক্স-রেসহ প্রয়োজনীয় কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। তাতে তাঁর যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। তখন তাঁকে ঢাকার মহাখালীতে অবস্থিত বক্ষব্যাধি হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। পরে তাঁর স্বজনেরা ২৩ মার্চ তাঁকে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যান। বাড়ি যাওয়ার পর তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার তাঁর মৃত্যু হয়। এতে সবার মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল, ওই যুবক হয়তো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এখন পরীক্ষার ফল নেগেটিভ আসায় সবাই স্বস্তি বোধ করবেন।