নারায়ণগঞ্জ থেকে নৌপথে চাঁদপুরে আসছেন লোকজন, আতঙ্ক

চাঁদপুর
চাঁদপুর

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকারি নির্দেশনায় এখন দেশের নৌপথ বন্ধ। তবে তা অমান্য করে বিভিন্ন এলাকা থেকে নৌকায় করে চাঁদপুরে আসছেন লোকজন। এতে করে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে করোনাভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, কড়া সতর্কতার মধ্যেই কেউ এভাবে এসে পড়লে হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হচ্ছে।

এলাকাবাসী ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় সরকারি সিদ্ধান্তে অফিস-আদালতে সাধারণ ছুটি চলছে। দোকানপাটের পাশাপাশি গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নৌযান চলাচলও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এসব নির্দেশনা সবাইকে মানাতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠপর্যায়ে কাজ করছে। কিন্তু চাঁদপুরের নৌপথগুলো বন্ধ রাখতে হিমশিম খাচ্ছে তারা। নারায়ণগঞ্জ থেকে নৌপথে আসা প্রায় ৩০০ জন গত তিন দিনে মতলব উত্তর উপজেলার বিভিন্ন স্থান দিয়ে চাঁদপুরে প্রবেশ করেছেন বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বেশি হওয়ায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় ষাটনল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরীফ সরকার বলেন, ‘আমরা নৌপথ দিয়ে নারায়ণগঞ্জসহ অন্য এলাকার লোকজনের চাঁদপুরে প্রবেশ ঠেকানোর চেষ্টা চালাচ্ছি। নদী পাড়ে লাঠিসোঁটা নিয়ে সার্বক্ষণিক পাহারা বসানো হয়েছে। অনেককে ফেরতও পাঠিয়েছি।’

জেলা প্রশাসন বলছে, এভাবে নৌপথে মানুষজনের চাঁদপুরে চলে আসা ঠেকাতে তারা তৎপর রয়েছে। প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চলছে। তবু এভাবে কেউ চলে এসেছেন, জানতে পারলে তাঁকে হোম কোয়ারেন্টিন করা হচ্ছে, যাতে তাঁর মাধ্যমে কোনো খারাপ অবস্থা সৃষ্টি না হতে পারে।

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান খান বলেন, ‘আমরা বিষয়টি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেছি। একই সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও কেউ এসে পড়লে সংশ্লিষ্ট এলাকা বা বাড়ির লোকজনকে কোয়ারেন্টিন করা হচ্ছে। এ জন্য প্রতিটি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জনপ্রতিনিধিসহ সচেতন লোকজনের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।’

এদিকে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে ২৫০ শয্যার চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নতুন করে ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ভর্তি হয়েছেন। বুধবার সকালে হাজীগঞ্জ উপজেলার ওই পুরুষ ব্যক্তিটি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসেন। উপসর্গ শোনার পর তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এ নিয়ে গত দুদিনে দুজনকে এই আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হলো।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, নতুন ভর্তি হওয়া ওই ব্যক্তি জ্বর, সর্দি,কাশি ও গলাব্যথায় ভুগছেন। তাই তাঁকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।