টঙ্গীর কিশোরের মৃত্যু, এলাকা লকডাউন

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

গাজীপুরের টঙ্গীর এক কিশোর মঙ্গলবার রাতে জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা গেছে। এ খবর জানার পর তার বাড়ি লকডাউন করে রেখেছেন এলাকার বাসিন্দারা।

ওই কিশোর (১৭) পরিবারের সঙ্গে টঙ্গীর আউচপাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় থাকত। মঙ্গলবার দিবাগত রাত সোয়া তিনটার দিকে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে মারা যায় সে।

পরিবার জানায়, ওই কিশোর একটি ওয়ার্কশপে শ্রমিকের কাজ করত। ১৩/১৪ দিন আগে তার হালকা জ্বর দেখা দেয়। প্রথমে বিষয়টির গুরুত্ব দেননি পরিবারের সদস্যরা। স্থানীয় একটি ফার্মেসি থেকে জ্বরের ওষুধ এনে খাওয়ানো হয়। কিন্তু জ্বর ক্রমেই বাড়তে থাকে। এর মাঝেই শুরু হয় শ্বাসকষ্ট। গত ২ এপ্রিল তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসক রক্ত পরীক্ষা করে তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। সঙ্গে একটি ব্যবস্থাপত্র দেওয়া হয়। বাসায় ফিরে সে মোতাবেক ওষুধ খাওয়ানো হলেও সুস্থ হয়নি ওই কিশোর। এ অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে। সেখান থেকে পুনরায় কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেখানে নেওয়া হলে রাত সোয়া তিনটার দিকে মারা যায় সে।

ওই কিশোরের মা বলেন, মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ছেলের শুধু এক্স-রে পরীক্ষা করা হয়। এরপর হাসপাতাল থেকে বলা হয়, প্রতিবেদন খারাপ এসেছে। দ্রুত তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন চিকিৎসকেরা। পরে ওই দিনই ছেলেকে সেখানে নিয়ে যান তাঁরা। তখন ভর্তি নেওয়া হয়। এরপর রাত তিনটার দিকে ছেলের প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তার। সঙ্গে প্রচুর কাশতে থাকে সে। একপর্যায়ে মারা যায়।

এদিকে ওই কিশোরের মৃত্যুর খবর বুধবার সকালে এলাকায় জানাজানি হয়। করোনাভাইরাসে মৃত্যু হয়েছে সন্দেহে তার ভাড়া বাড়িসহ আশপাশের কয়েকটি বাড়ি লকডাউন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, বাড়তি সতর্কতার অংশ হিসেবে ওই বাড়ি ও পাশের আরও চারটি বাড়ি লকডাউন করে রেখেছেন তাঁরা।

স্থানীয় পৌরসভার কাউন্সিলর মো. নাসির উদ্দিন মোল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘যেহেতু উপসর্গগুলো করোনাভাইরাসের, তাই আমরা বাড়তি সতর্কতা নিয়েছি। এর অংশ হিসেবে পরিবারের সবাইকে ঘরে থাকতে বলেছি। আর এমনিতেই আমাদের এলাকায় লোকজনের চলাচল বন্ধ রয়েছে।’

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ওই কিশোরের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। লাশ এখনো রয়েছে হাসপাতালের মর্গে। নমুনা পরীক্ষা শেষে লাশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) এমদাদুল হক বলেন, ‘আমরা এলাকাবাসীর কাছ থেকে বিষয়টি শুনেছি। এরপর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে ওই এলাকায় চলাচল আরও সীমিত করে দিয়েছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’