কাঁটাবনের বন্য প্রাণীরা যেভাবে টিকে আছে

রাজধানীর কাঁটাবনের লোহার খাঁচায় আটক বন্য প্রাণীদের নিয়মিত খাবার দেওয়া হচ্ছে। কাঁটাবন বন্য প্রাণী মার্কেটের দোকানিরা বলছেন, লকডাউনের মধ্যেও রোজ প্রাণীদের খাবার দিচ্ছেন, করছেন পরিচর্যাও। বন্য প্রাণীরা ভালো আছে।

কাঁটাবনের বন্য প্রাণীর একটি দোকানের পাখিকে খাওয়াচ্ছেন দোকানের কর্মচারী। ছবি: আসাদুজ্জামান
কাঁটাবনের বন্য প্রাণীর একটি দোকানের পাখিকে খাওয়াচ্ছেন দোকানের কর্মচারী। ছবি: আসাদুজ্জামান

কাঁটাবন বন্য প্রাণী মার্কেটের একাধিক দোকানির সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, করোনাভাইরাসের এই সময়ে তাঁরা দোকানে আসেন সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে। প্রাণীদের খাবার, পরিচর্যা শেষে আবার দোকান বন্ধ করে দেন বেলা ২টায়। এরপর আবার সন্ধ্যার দিকে দোকানে এসে বন্য প্রাণীদের পরিচর্যা করে দোকান বন্ধ করে চলে যান। করোনাভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে এভাবে তাঁরা বন্য প্রাণীদের পরিচর্যা করে আসছেন।

কাঁটাবন বন্য প্রাণীর মার্কেটে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দেখা গেল, দোকানগুলোয় প্রাণীদের পরিচর্যা করছেন দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা। কাঁটাবনের পেটস ওয়ার্ড নামের দোকানটির কর্মচারী আল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দোকানের প্রাণীরা সব ভালো আছে। গত ২৬ মার্চ থেকে রোজ সকাল ১০টার দিকে দোকানে আসি। এরপর প্রাণীদের খাবার দিই। পরিচর্যা করি। এই মার্কেটের অন্যরাও প্রতিদিনই দোকানে এসে প্রাণীদের পরিচর্যা করে। কোনো প্রাণী না খেয়ে নেই।’

বার্ড প্যালেস নামের দোকানের কর্মচারী মোহাম্মদ রাজু বলেন, ‘রোজ দোকান খুলছি। প্রাণীরা হাওয়া-বাতাস খাইতেছে। সকাল ১০টায় আসি আবার বেলা ২টার সময় চলে যাই। প্রাণীগুলো না খাওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। প্রাণীদের কোনো সমস্যা নেই।’

বন্য প্রাণীদের দোকানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ছবি: আসাদুজ্জামান
বন্য প্রাণীদের দোকানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ছবি: আসাদুজ্জামান

প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য পরিচর্যা করলেও আর্থিক সংকটে কাঁটাবনের বন্য প্রাণীর দোকানিরা।
দোকানমালিক শিপন বলেন, ‘বোবা প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমাদের রোজ দোকানে আসতে হয়। ওদের বাঁচিয়ে রাখতে হবে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার ও পানি দিয়ে যাই। প্রতিদিন দোকানপাট তিন থেকে চার ঘণ্টা খোলা রাখি। প্রাণীদের বাতাস খাওয়াই। তাদের কোনো সমস্যা নেই। ভালো আছে।’

কাঁটাবনের বন্য প্রাণীর মার্কেট। ছবি: আসাদুজ্জামান
কাঁটাবনের বন্য প্রাণীর মার্কেট। ছবি: আসাদুজ্জামান

বন্য প্রাণীর দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেল, প্রতিটি দোকানের ভেতর বাতাস চলাচলের জন্য ব্যবস্থা রয়েছে।
কাঁটাবনের একটি বন্য প্রাণীর দোকানের ব্যবস্থাপক শুভ আহমেদ বলেন, ‘প্রাণীদের খাবারের কোনো সংকট নেই। আমরা প্রতিদিন দোকান খুলি। আমাদের বেচাকেনা নেই। কিন্তু এই বোবা প্রাণীদের তো বাঁচিয়ে রাখতে হবে।’