নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ থেকে গাইবান্ধায় আসা ৯২ শ্রমিক কোয়ারেন্টিনে

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ থেকে নৌপথে আসা ৯২ জন শ্রমিককে গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার দুইটি চরাঞ্চলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ফুলছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু রায়হান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ফুলছড়ি উপজেলা। এর মধ্যে ছয়টি ইউনিয়ন নদী ভাঙন কবলিত। ফুলছড়ি উপজেলার কয়েক হাজার শ্রমজীবী মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় শ্রমিকের কাজ করেন। তারা নদী ভাঙনে নিঃস্ব। সম্প্রতি করোনাভাইরাসের কারণে তাঁদের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে তাঁরা বেকার হয়ে পড়েন। এসব লোকজন রাতের আঁধারে নৌপথে বাড়ি ফিরতে শুরু করেন। নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ থেকে দুটি নৌকাযোগে বেশ কয়েকজন বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁরা ফুলছড়ি ও ফজলুপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। বুধবার রাতে এমন খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু রায়হান তৎপর হয়ে ওঠেন। তিনি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন। তাঁকে সহায়তা করেন ফুলছড়ি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, ফুলছড়ি থানার ওসি কাওছার আলী, ফুলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর মণ্ডল।

বৃহস্পতিবার ভোরে শ্রমিকদের বহন করা নৌকা দুটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেন প্রশাসনের লোকজন। এরপর থানা-পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় ৯২ জন শ্রমিককে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ফুলছড়ি ইউনিয়নের ৬৪ জন বাসিন্দাকে ইউনিয়নের টেংরাকান্দি এম এ সবুর দাখিল মাদ্রাসায় ও ফজলুপুর ইউনিয়নের ২৮ জন বাসিন্দাকে ইউনিয়নের খাটিয়ামারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ফুলছড়ি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের উদ্যোক্তা ও স্বেচ্ছাসেবক মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘চরাঞ্চলের মানুষ করোনাভাইরাস সম্পর্কে সচেতন নয়। করোনাভাইরাস কীভাবে ছড়ায়, খুব একটা জানেন না। সংক্রমিত কেউ গোপনে এলাকায় এলে তাঁদের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে এই ভাইরাস ছড়ানোর হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই আমরা শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার বিষয়টি জানতে পেরে ইউএনও মহোদয় জানাই। পরে শ্রমিকদের রাখার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন প্রস্তুত করতে সহায়তা করেছি।’

ফুলছড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল গফুর মণ্ডল বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তিদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরপরও যদি নতুন করে কেউ এলাকায় আসে তাঁদের কোয়ারেন্টিনে রাখার বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে।

ফুলছড়ির ইউএনও আবু রায়হান বলেন, দুটি স্থানে ৯২ জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা হয়েছে। কোয়ারেন্টিনে থাকা মানুষগুলোর খাদ্য ও সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।