বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাচ্ছে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পটুয়াখালীর পায়রা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৬০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটি পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতা বা লোডে চালানো গেছে আজ শুক্রবার। পূর্ণ ক্ষমতায় প্রথম ইউনিটটি চালানোর পর এটি ৬৮০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রর ইনিশিয়াল অপারেশন ডেট (আইওডি) ঘোষণা করা হবে চলতি সপ্তাহে। এতে করে চলতি সপ্তাহ থেকেই পায়রা কেন্দ্রর প্রথম ইউনিটের বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু হতে পারে। এটিকে কয়লাখাতের ফ্ল্যাগশিপ বা নেতৃত্বদানকারী বিদ্যুৎকেন্দ্র বলা হচ্ছে।

আমদানি করা কয়লা দিয়ে দেশের সব থেকে বড় পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রর উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। এখানে দুটি ইউনিটের উৎপাদন ক্ষমতা পৃথকভাবে ৬৬০ মেগাওয়াট করে। কেন্দ্রের প্রথম ইউনিট পরীক্ষামূলকভাবে উৎপাদন শুরু করে গত ১৩ জানুয়ারি বেলা ১১টায়। এরপর থেকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি পরীক্ষণের নানা ধাপে উত্তীর্ণ হয়। এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বাণিজ্যিক উৎপাদনের ছাড়পত্র দেয়।

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টায় অর্থাৎ ৭ এপ্রিল জিরো আওয়ার থেকে কেন্দ্রর নির্ভরযোগ্য উৎপাদন পরীক্ষা শুরু হয়। এ নির্ভরযোগ্য পরীক্ষা উৎপাদন সাত দিন চলবে। এই সাত দিনের যে কোনো একদিন পিডিবি কেন্দ্রটিকে টানা ছয় ঘণ্টা চালানোর নির্দেশ দেবে। যদি এ পরীক্ষায় পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদনে যেতে পারে তাহলে বাণিজ্যিক উৎপাদন করার ছাড়পত্র পাবে। আর পূর্ণ সক্ষমতায় উৎপাদন না করতে পারলে জরিমানা দিতে হয়। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের স্থাপিত ক্ষমতা ছিল ৬৬০ মেগাওয়াট, কিন্তু এরও বেশি উৎপাদন করেছে কেন্দ্রটি। আগামী ১৩ এপ্রিল সোমবার আইওডি ঘোষণা করা হবে।

পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের অর্ধেক মালিকানা রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের হাতে। বাকি অর্ধেক চীনের। যৌথ মালিকানায় রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) এবং চীনের ন্যাশনাল মেশিনারি এক্সপোর্ট অ্যান্ড ইমপোর্ট কোম্পানি (সিএমসি) কেন্দ্রটি নির্মাণ করেছে। এ জন্য উভয় প্রতিষ্ঠান মিলে বাংলাদেশ চায়না পাওয়ার কোম্পানি (বিসিপিসিএল) গঠন করেছে। কেন্দ্রটির সমান ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট আগামী জুনে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে।

বিসিপিসিএল এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ এম খোরশেদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ৬৬০ মেগাওয়াটের হলেও সেখান থেকে ৬৮০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে। এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাণিজ্যিক উৎপাদনে এলে এটিই হবে আমদানি করা কয়লা দিয়ে দেশের প্রথম বিদ্যুৎকেন্দ্র।

প্রসঙ্গত ২০১৬ সালের ৩০ মার্চ কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। কেন্দ্রটি নির্মাণ ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেছে চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান এনইপিসি।