থানায় গাড়ি জমা দিলেই মিলছে খাদ্যসহায়তা

স্থানীয় ছোট যানবাহনের চালক ও শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে শরীয়তপুরের নড়িয়া থানা–পুলিশ।
স্থানীয় ছোট যানবাহনের চালক ও শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে শরীয়তপুরের নড়িয়া থানা–পুলিশ।

স্থানীয় পর্যায়ের ছোট যানবাহনের চালক ও শ্রমিকদের খাদ্যসহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে শরীয়তপুরের নড়িয়া থানা–পুলিশ। করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যেও যাদের জীবিকার প্রয়োজনে সড়কে নামতে হচ্ছে, তাদের তালিকা করে পুলিশ খাদ্যসহায়তা দিচ্ছে। এর খরচ বহন করা হচ্ছে নড়িয়া থানা–পুলিশের নিজেদের টাকা থেকে।

পুলিশ জানায়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চলছে সাধারণ ছুটি। হাটবাজার-ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে। বন্ধ আছে সব ধরনের গণপরিবহন। বিনা প্রয়োজনে মানুষকে ঘরের বাইরে যেতে নিরুৎসাহিত করছে স্থানীয় প্রশাসন। সরকারি আদেশ মানা হচ্ছে কি না, তা তদারক করছে পুলিশ। এরপরও শরীয়তপুরের বিভিন্ন হাটবাজারে, পাড়া–মহল্লায় মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। রাস্তায় বের করা হচ্ছে রিকশা, ভ্যান ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক। সীমিত পরিসরে এসব যানবাহন চলাচল করার কারণে মানুষ হাটবাজারে যাতায়াতে এগুলো ব্যবহার করছে।

এসব যানবাহন রাস্তায় চলাচল বন্ধ করতে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা অভিযান চালাচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার ও গতকাল শুক্রবার নড়িয়ার বিভিন্ন সড়ক থেকে পুলিশ ১০২টি রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক জব্দ করেছে। খাদ্যসহায়তার মধ্যে আছে চাল, ডাল, তেল, আলু ও লবণ। পুলিশের পক্ষে তাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, ওই খাদ্যসহায়তা শেষ হলে ফোন করলে আবার সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে। এ ছাড়া নড়িয়ার অন্য চালক ও শ্রমিকেরা তাঁদের পরিবহন থানায় জমা রাখলেই খাদ্যসহায়তা পাবেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ব্যাটারিচালিত ভ্যানের চালক বলেন, সবকিছু বন্ধ করে দেওয়ার পর প্রথম এক সপ্তাহ তিনি বাড়ি থেকে বের হননি। এরপর তিনি মাঝেমধ্যে ভ্যান চালিয়েছেন। গতকাল নড়িয়া থানার পুলিশ তাঁর ভ্যানটি জব্দ করে থানায় রাখে। তাঁকে খাদ্যসহায়তা দিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়, এখন সড়কে গাড়ি চালানো যাবে না। খাবার পাওয়ায় আপাতত চিন্তা নেই বলে জানান তিনি।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজ উদ্দিন বলেন, দেশে এখন একটি মানবিক সংকট চলছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে রাষ্ট্রের নির্দেশনা মানতে হবে। আর এমন পরিস্থিতিতে মানবিক আচরণ করে অসহায় ও বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। গাড়িগুলো জব্দ করাই সমাধান নয়; তাঁদের হাতে খাদ্যসহায়তা তুলে দেওয়া গেছে, এটাই এই মুহূর্তে সমাধান। এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।

শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার এস এম আশ্রাফুজ্জামান বলেন, পুলিশকে মানবিক আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও পুলিশের মহাপরিদর্শক। এ কারণে শরীয়তপুরের জেলা পুলিশ অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। ভিক্ষুক, বেদে, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে।