বসল ২৮তম স্প্যান, দৃশ্যমান পদ্মা সেতুর ৪২০০ মিটার

পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে বসানো হয়েছে ২৮তম স্প্যান। ছবি: সংগৃহীত
পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে বসানো হয়েছে ২৮তম স্প্যান। ছবি: সংগৃহীত

পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে বসানো হয়েছে ২৮তম স্প্যান। শনিবার সকাল নয়টার সময় ২০ ও ২১ নম্বর পিয়ারের ওপর বসানো হয় এটি। এর ফলে ৪ হাজার ২০০ মিটার দৃশ্যমান হয়েছে পদ্মা সেতু। বিশেষ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করায় করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও প্রত্যাশিত গতিতে এগিয়ে চলেছে পদ্মাসেতুর কাজ।

এর আগে ২৮ মার্চ জাজিরা প্রান্তে বসানো হয়েছিল সেতুর ২৭তম স্প্যান। চলতি বছরের জুলাইয়ের মধ্যে ৪২টি পিলারের ওপর ৪১টি স্প্যান বসানো পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।

২৮তম স্প্যানটি ছিল মুন্সিগঞ্জের কুমারভোগ কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে। সেখান থেকে শুক্রবার ভাসমান ক্রেনে করে সেটি ভাসিয়ে নিয়ে আসা হয় ২০ ও ২১ নম্বর পিয়ার বরাবর। এরপর শুক্রবারের মধ্যে আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করা হয়। শনিবার সকাল থেকেই শ্রমিক ও প্রকৌশলীরা মিলে স্প্যানটি পিলারের ওপর বসানোর কাজ শুরু করেন।

স্প্যান বসানোর পাশাপাশি রোড স্ল্যাব ও রেল স্ল্যাব বসানোর কাজও চলছে। সেতুর জন্য বসবে আর মাত্র বাকি ১৩টি স্প্যান। এর মধ্যে বাংলাদেশে আছে ১১টি। দুটি স্প্যান এখনো চীনে রয়েছে। করোনাভাইরাসের প্রভাব কেটে গেলে ওই দুটি স্প্যান বাংলাদেশে আনা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাস নিয়ে উদ্বেগের কারণে সেতুর কাজে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেসব এলাকায় পদ্মা সেতু-সংশ্লিষ্ট কাজ চলছে, তার পুরোটাই ঘিরে রাখা হয়েছে। ওই এলাকার বাইরে যেতে পারেন না কাজে নিযুক্ত কেউই। জরুরি প্রয়োজনে কাউকে বের হতে হলে, তিনি এখন আর ভেতরে ঢুকতে পারবেন না। করোনা-পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই কেবল তিনি সেতুর কাজে যোগ দিতে পারবেন। আর সেতুর কাজে নিযুক্ত তিন শতাধিক চীনা নাগরিকের সবাইকে বাংলাদেশে ফেরার পর কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। বর্তমানেও কয়েকজন কোয়ারেন্টিনে আছেন। তবে কারও দেহে করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ নেই।

গত ৩১ মার্চ পদ্মাসেতুর ২৬ নম্বর পিয়ারের কংক্রিটের ঢালাই কাজ সম্পন্ন হয়। এর মাধ্যমে শেষ হয় পদ্মা সেতুর পুরো ৪২টি পিয়ারের কাজ। এ ছাড়া উভয় প্রান্তে থাকা ৯১টি ভায়াডাক্টের (খিলান) কাজও শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন পদ্মাসেতুর এক প্রকৌশলী।

পদ্মা সেতুর নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আব্দুল কাদের বলেন, সবকিছু অনুকূলে থাকায় অল্প সময়ের মধ্যে ২৮তম স্প্যানটি বসানো সম্ভব হয়েছে। চলতি মাসে আরও একটি স্প্যান বসানোর পরিকল্পনা আছে। যেহেতু এখন ঝড়-বাদলের দিন, তাই একদিন আগে স্প্যান এনে রাখা হয়। পরের দিন তা পিয়ারের ওপরে বসানো হয়। পরিকল্পনামাফিক কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। তাঁরা আশা করছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সব কাজ সম্পন্ন করা যাবে।

পদ্মা সেতু ঢাকা বিভাগের দুই জেলা মুন্সিগঞ্জ ও মাদারীপুরকে সংযুক্ত করেছে। এই সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণবঙ্গের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকরী উন্নতি হবে।