ঘরে থাকতে হবে সন্ধ্যা ৬টা-সকাল ৬টা, অন্য সময়ও শর্ত

যশোরে ঈদগাহ মোড়। যশোর, ৯ এপ্রিল। ছবি: এহসান-উদ-দৌলা
যশোরে ঈদগাহ মোড়। যশোর, ৯ এপ্রিল। ছবি: এহসান-উদ-দৌলা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার ক্ষেত্রে কঠোর হচ্ছে সরকার। এখন থেকে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত কেউ ঘরের বাইরে বের হতে পারবে না। এই নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে অন্য সময়েও অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে সবার প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার জারি করা ছুটির আদেশটি সংশোধন করে নতুন সময়সীমা ঠিক করে আজ শনিবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আগের দিনের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, সন্ধ্যা ছয়টার পর ঘর থেকে বের হওয়া যাবে না।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব শেখ ইউসুফ হারুন আজ প্রথম আলোকে বলেন, এর মানে হলো সন্ধ্যা ছয়টার পর ওষুধের দোকান ছাড়া অন্যান্য দোকানপাটও বন্ধ থাকবে। দোকানপাট বন্ধের বিষয়ে এর আগে অন্য কোনো সংস্থা ভিন্ন কোনো নির্দেশ দিয়ে থাকলে সেটা সংশোধন করতে অনুরোধ করা হবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ৬ এপ্রিল পুলিশ নির্দেশ দিয়ে বলেছিল, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওষুধের দোকান ছাড়া সারা দেশের সব দোকানপাট সন্ধ্যা সাতটার মধ্যে বন্ধ করতে হবে।
গতকাল সরকারি-বেসরকারি অফিসে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ২৫ এপ্রিল (সাপ্তাহিক ছুটিসহ) পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সংশোধিত ছুটির প্রজ্ঞাপনেও আগের দিনের কয়েকটি শর্ত দিয়ে সেগুলো কঠোরভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে সবার প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে। সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত কেউ ঘরের বাইরে বের হতে পারবে না। এই নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা নেওয়া হবে। এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে সীমিত থাকবে। আর বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে।

অবশ্য জরুরি সেবার (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন, ইন্টারনেট প্রভৃতি) ক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না। এ ছাড়া কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, জ্বালানি, সংবাদপত্র, খাদ্য, শিল্পপণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন এবং কাঁচাবাজার, খাবার, ওষুধের দোকান ও হাসপাতাল এই ছুটির মধ্যে পড়বে না। জরুরি প্রয়োজনে অফিসগুলো খোলা রাখা যাবে। প্রয়োজনে ওষুধশিল্প, উৎপাদন ও রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা চালু রাখা যাবে। আর বিরাজমান পরিস্থিতির উন্নতি হলে মানুষের জীবন-জীবিকার স্বার্থে রিকশা-ভ্যানসহ যানবাহন, রেল, বাস পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে।

এ ছাড়া মানুষের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালে সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার বিষয়ে নির্দেশনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
করোনাভাইরাসের কারণে প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি দেওয়া হয়েছিল। এরপর ছুটি বাড়িয়ে ১১ এপ্রিল করা হয়। ছুটি তৃতীয় দফা বাড়িয়ে করা হয় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এখন চতুর্থ দফায় ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি