করোনা রোধে সরকার উদাসীনতা দেখিয়েছে: বিএনপি

কেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকদের পিপিই দিচ্ছেন বিএনপির নেতা জহির উদ্দিন স্বপন। ছবি: সংগৃহীত
কেয়ার হাসপাতালের চিকিৎসকদের পিপিই দিচ্ছেন বিএনপির নেতা জহির উদ্দিন স্বপন। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে ঢাকার ১৫টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) দিল বিএনপি। আজ শনিবার পাঁচটি হাসপাতালে পিপিই বিতরণের সময় বিএনপির নেতারা অভিযোগ করেন, সরকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সীমাহীন উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে।

জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ) ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), বিএনপির পক্ষে পাঁচটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এই চিকিৎসা সরঞ্জাম প্রদান করে। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল আরও আটটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পিপিই সরবরাহ করা হয়।

আজ বিভিন্ন হাসপাতালে পিপিই সরবরাহ করেন ড্যাবের সভাপতি ডা. হারুনুর রশীদ, মহাসচিব ডা. আবদুস সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন, হাবীব ঊন নবী খান, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারীসহ ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা ও চিকিৎসক জহিরুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম ও শহীদ হাসান।

রাজধানীর কেয়ার হাসপাতালে পিপিই বিতরণ শেষে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা জহির উদ্দিন স্বপন করোনা প্রতিরোধে সরকারের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সরকার করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সীমাহীন উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছে। তারা একদিকে রাষ্ট্রযন্ত্রের নানা প্রতিষ্ঠানকে করোনার মতো মহামারি প্রতিরোধে সরকারের দুর্বলতাকে লুকাতে তথ্য নিবর্তনমূলক আইনের ব্যবহার করছে। অন্যদিকে প্রণোদনার নামে বিপর্যস্ত জনগোষ্ঠীকে শুভংকরের ফাঁকি উপহার দিচ্ছে।

পিপিই বিতরণের সময় বিএনপির নেতারা করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সম্মুখ সারির যোদ্ধা দেশের চিকিৎসকসমাজের অবদানকে কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন। এ সময় করোনার চিকিৎসা দিতে গিয়ে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া চিকিৎসক মঈনুদ্দিন আহমেদকে বাংলাদেশে করোনা যুদ্ধে প্রথম শহীদ চিকিৎসক বলে অভিহিত করেন জহিরউদ্দিন।

প্রসঙ্গত, বিএনপি-সমর্থক চিকিৎসকদের নেতৃত্বে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) গঠন হয়। নেতারা জানান, চিকিৎসকদের ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

এর আগে সংগঠন দুটির পক্ষ থেকে গত ১৫ এপ্রিল রাজধানীর ৮টি বেসরকারি মেডিকেল ও ২টি ডেন্টাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকদের নিরাপত্তার জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) দেওয়া হয়। সেগুলো হচ্ছে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ, ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ, এমএইচ শমরিতা মেডিকেল কলেজ, এম এইচ শমরিতা ডেন্টাল কলেজ, ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজ, শাহাবুদ্দিন মেডিকেল কলেজ, আদ-দ্বীন মেডিকেল কলেজ, আপডেট ডেন্টাল কলেজ, কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ ও ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ।

এ ছাড়া জেডআরএফ ও ড্যাব করোনা-সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ এবং প্রাথমিক জরুরি স্বাস্থ্যসেবার জন্য ২৪ ঘণ্টার মোবাইল হটলাইন চালু করা হয়েছে। রোগের ধরন বুঝে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে ফোনে সংযুক্ত করার পাশাপাশি সমস্যা জেনে টেলিফোনেই রোগীকে প্রেসক্রিপশন দেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে মূল্য পরিশোধ সাপেক্ষে রোগীর চাহিদা অনুযায়ী ওষুধ বাড়ি পৌঁছানোর জন্য মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এ্যামট্যাব) একটি টিম বিনা মূল্যে সেবাদানে নিয়োজিত আছে। এর বাইরে জেডআরএফের কৃষিবিদ গ্রুপ রাজধানীর বস্তিতে জীবাণুনাশক ওষুধ ও স্প্রে এবং প্রকৌশলী গ্রুপ সাধারণ মানুষের হাত ধোয়ার জন্য রাজধানীতে হাত ধোয়ার বেসিন স্থাপন করছে।