পঞ্চগড়ে জ্বর, গলাব্যথা নিয়ে কিশোরের মৃত্যু, নমুনা সংগ্রহ

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের একটি গ্রামে জ্বর, গলাব্যথা নিয়ে এক কিশোরের (১৬) মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া ওই কিশোরের করোনা পরীক্ষার জন্য আজ সোমবার সকালে নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। একই সঙ্গে তাঁর বাড়িসহ আশপাশের পাঁচটি বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।

গত রোববার রাতে ওই কিশোর ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। সে পঞ্চগড় সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। ওই কিশোরের পরিবারের সদস্যদের দাবি, সে দীর্ঘদিন ধরে জন্ডিস ও টনসিলের সমস্যায় ভুগছিল।

বোদা উপজেলা প্রশাসন ও পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরে ওই কিশোর গলায় টনসিলের সমস্যা ও জন্ডিসে ভুগছিল। এরই মধ্যে তার টনসিলের কারণে গলার দুই পাশে ফুলে যায়। অসুস্থ অবস্থায় কখনো চিকিৎসকের কাছে আবার কখনো কবিরাজের কাছে চিকিৎসা করিয়েছে তার পরিবার। রোববার রাতে জ্বর ও গলাব্যথা বেড়ে গিয়ে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তখন পরিবারের সদস্যরা তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়।

ওই কিশোরের প্রবাসী এক ভাই তিন মাস আগে মালদ্বীপ থেকে বাড়ি ফেরেন। তার ট্রাকচালক আরেক ভাই ৬ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ থেকে বাড়ি ফেরেন। প্রশাসনের নির্দেশে তাঁরা হোম কোয়ারেন্টিনে ছিলেন। এরই মধ্যে ওই কিশোরের এ ধরনের উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

মারা যাওয়া কিশোরের বাবা বলেন, ‘আমার ছেলে দীর্ঘদিন ধরে জন্ডিস আর টনসিলের ব্যথায় অসুস্থ ছিল। রোববার রাতে তার জ্বর আর গলাব্যথা বেড়ে গেলে নিশ্বাস নিতে পারছিল না। পরে আমরা তাকে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে নেওয়ার কিছুক্ষণ পরেই সে মারা যায়।’ তাঁর পরিবারের আরও দু-তিনজনের এ ধরনের টনসিলের সমস্যা দু-তিন মাস পরপর দেখা দেয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এস আই এম রাজিউল করিম বলেন, ওই কিশোরের বাড়িতে গিয়ে তার দীর্ঘদিনের অসুস্থতার কথা জানা গেছে। বিভিন্ন সময় তার চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্রও তাঁরা দেখেছেন। হয়তো দীর্ঘদিনের টনসিল ফেটে গিয়ে অতিরিক্ত ব্যথার সঙ্গে জ্বর ছিল তার। এ ছাড়া গলায় সমস্যা হওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। তবে সন্দেহ দূর করতে করোনা পরীক্ষার জন্য তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোলেমান আলী বলেন, করোনা সন্দেহে বিশেষ ব্যবস্থায় তার লাশ দাফন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের বাড়িটিসহ আশপাশের পাঁচটি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। লকডাউন হওয়া ওই পরিবারগুলোর খাবারসহ অন্য যেকোনো সমস্যায় উপজেলা প্রশাসন সহায়তা করবে।