ছুটিতে সীমিত পরিসরে আদালত চালু হচ্ছে

করোনাভাইরাসের কারণে ঘোষিত ছুটির সময় সীমিত পরিসরে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত ও হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চ জরুরি বিষয়াদি নিষ্পত্তির জন্য বসবেন। এ ছাড়া দেশের প্রত্যেক জেলার জেলা ও দায়রা জজ এবং মহানগর এলাকার মহানগর দায়রা জজকে ছুটিকালীন সময়ে তাদের সুবিধা মতো প্রতি সপ্তাহে যেকোনো দুইদিন কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জরুরি জামিন শুনানির জন্য সীমিত আকারে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত পৃথক বিজ্ঞপ্তি ও স্মারকে এসব তথ্য দেওয়া হয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে আদালতে সাধারণ ছুটি চলছে। এই ছুটি আগামী ৫ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অবশ্য দেশের প্রত্যেকটি জেলায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ও মেট্রোপলিটন এলাকায় চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জরুরি মামলার জন্য এক বা একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট কর্তব্যরত আছেন। তবে এই সময়ে স্বল্প পরিসরে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনা নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে আলোচনা চলছিল। এ অবস্থায় আজ ওই সিদ্ধান্ত এলো।

চেম্বার আদালত ও হাইকোর্ট বসবেন

দেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কঠোরভাবে সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে অতি জরুরি বিষয়গুলো শুনানির জন্য ছুটিকালীন সময়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে বসবেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ছুটিকালীন সময়ে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সব অধিক্ষেত্রের অতি জরুরি বিষয়গুলো শুনানির জন্য হাইকোর্ট বিভাগের কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। আদালত পরিচালনার কর্মপন্থা নির্ধারণ এবং কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব অনুসরণের নিয়ম-কানুন বিষয়ে বিচারপতিরা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে।

জরুরি জামিন শুনানি সপ্তাহে দুইদিন

প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল স্বাক্ষরিত অপর স্মারকে বলা হয়, উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দেশের প্রত্যেক জেলার জেলা ও দায়রা জজকে এবং মহানগর এলাকার মহানগর দায়রা জজকে ছুটিকালীন সময়ে তার সুবিধা মতো প্রতি সপ্তাহে যেকোনো দুইদিন কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জরুরি জামিন শুনানির নিমিত্ত সীমিত আকারে আদালত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

স্মারকে আরও বলা হয়, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অথবা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিজে অথবা তার নিয়ন্ত্রণাধীন এক বা একাধিক ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা ছুটিকালীন সময়ে তার/তাদের সুবিধা মতো প্রতি সপ্তাহে যেকোন দুইদিন কঠোরভাবে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে জরুরি জামিন শুনানির (কারাগারে থাকা হাজতী আসামির আবেদনসহ) নিমিত্ত সীমিত আকারে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ প্রদান করা হলো।

আগের ধারাবাহিকতা পুনরায় উল্লেখ করে স্মারকে বলা হয়, যেসব ফৌজদারি মামলায় আসামিকে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত জামিন প্রদান করা হয়েছে বা যে সকল মামলায় উচ্চ আদালত হতে অধস্তন আদালতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আত্মসমর্পণের শর্তে জামিন প্রদান করা হয়েছে বা যে সকল মামলায় নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা/স্থিতাবস্থা/স্থগিতাদেশের আদেশ দেওয়া হয়েছে সেসব মামলার আদেশের কার্যকারিতা আদালত নিয়মিতভাবে খোলার তারিখ হতে দুই সপ্তাহ পর্যন্ত বর্ধিত হয়েছে মর্মে গণ্য হবে। সাধারণ ছুটিকালীন সময়ে ওই মামলা সমূহের বিষয়ে কোনো আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করা হবে না।

স্মারকে আরও বলা হয়, একটি মামলার জামিন শুনানিতে কেবলমাত্র একজন আইনজীবী অংশগ্রহণ করবেন। আদালত প্রাঙ্গণ এবং এজলাস কক্ষে সামাজিক দূরত্বের নিয়ম-কানুন কঠোরভাবে অনুসরণ করা না হলে আদালতের কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে। আদালত প্রাঙ্গণে এবং এজলাস কক্ষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে স্ব স্ব আইনজীবী সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক এবং কার্যকরী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে জেলা ও দায়রা জজ/মহানগর দায়রা জজ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবেন। জামিন শুনানিকালে কারাগারে থাকা আসামিদের কারাগার হতে প্রিজনভ্যানে বা অন্য কোনোভাবে আদালত প্রাঙ্গণে ও এজলাস কক্ষে হাজির না করার জন্য নির্দেশ প্রদান করা