২১৮ পুলিশ সদস্য আক্রান্ত, অর্ধেকই ঢাকায়

করোনাভাইরাসে পুলিশের আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। এ পর্যন্ত সারা দেশে ২১৮জন পুলিশ সদস্য করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এদের অর্ধেকের বেশি ঢাকা মহানগরে। ঢাকায় ১১৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে পুলিশ বিভাগে কাজ করা সাধারণ কর্মচারীও আছেন। এ ছাড়া ৬৫২ জনকে কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে ।

পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশজুড়ে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও লকডাউন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য পুলিশ সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। এ ছাড়া রাস্তায় জীবাণুনাশক ছিটানো, শ্রমজীবী মানুষকে সহায়তা করা, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া এবং কোয়ারেন্টিন থেকে পালানো ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার কাজ করছেন পুলিশ। এসব কাজ করতে গিয়ে নিজের অজান্তেই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ঢাকা মহানগরের পরে করোনায় বেশি আক্রান্ত হয়েছে গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদস্যরা। এই মহানগরে ২৬জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরে রয়েছে গোপালগঞ্জ জেলা। এ জেলায় আক্রান্ত ১৮জন। এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জ জেলায় ১৬জন আক্রান্ত হয়েছেন। চট্টগ্রাম মহানগরে আক্রান্ত হয়েছেন ৩জন।

ঢাকা মহানগরে আক্রান্তদের মধ্যে একজন অতিরিক্ত উপকমিশনার, তিনজন এসআই, একজন সার্জেন্ট, পাঁচজন এএসআই, সাতজন সাধারণ সদস্য ও বাকিরা কনস্টেবল। ছয়জন নারীও আছেন এই তালিকায়। এদের ৯৮জন আছেন পুলিশ কেন্দ্রীয় হাসপাতালে, বাকিরা বাসায় অবস্থান করছেন।

ঢাকা মহানগর কমিশনার শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের যে সদস্যরা আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা সবাই বাইরে দায়িত্ব পালনে গিয়েছিলেন। অসাবধানতাবশত মানুষের কাছাকাছি চলে যাওয়ায় তাঁরা সংক্রমিত হয়েছেন বলে তাঁরা মনে করছেন। দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ সদস্যদের আরও সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে পুলিশ কমিশনার বলেন, পুলিশ সদস্যদের সুরক্ষায় প্রথম থেকেই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। সেগুলো এখন আরও জোরদার করা হচ্ছে।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, পুলিশ যাদের সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে, তাদের দ্রুত আলাদা করে ফেলা হচ্ছে। তাঁদের জন্য ডেমরার অস্থায়ী পুলিশ লাইনসে ১০০টি বিছানার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া রাজারবাগ মেহমানখানা এবং মিরপুর মেহমানখানায়ও কোয়ারেন্টিন এবং আইসোলেশনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, দেশে দুই লক্ষাধিক পুলিশ সদস্য সরাসরি মাঠে থেকে করোনার বিস্তাররোধে কাজ করছেন। তাদেরকে যথাসম্ভব সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে। এখনও অনেক চাহিদা রয়েছে। তারপরও কাজ করতে গিয়ে পুলিশের সদস্যদের সাধারণ মানুষের সুরক্ষার জন্য জেনে শুনেই জীবনের ঝুঁকি নিতে হচ্ছে। প্রতিটি কাজেই তাদের মানুষের খুব কাছে যেতে হচ্ছে। সে কারণে তারের ভেতরে সংক্রমণ হচ্ছে। তবে আক্রান্ত এই সদস্যদের চিকিৎসার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।