কিট কার্যকর কি না পরীক্ষা করে দেখুন, সরকারকে জাফরুল্লাহ

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ফাইল ছবি
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি জাফরুল্লাহ চৌধুরী। ফাইল ছবি

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র উদ্ভাবিত করোনা নির্ণায়ক জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট র‌্যাপিড টেস্টিং কিট আজ রোববারও গ্রহণ করেনি ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর—এ অভিযোগ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের।

এরই প্রেক্ষাপটে আজ বিকেল চারটায় ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র কার্যালয়ে এর প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডাকেন। তিনি সরকারকে কিটটি কার্যকর কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে বলেন। এই প্রক্রিয়া যত দ্রুত হবে, ততই দেশ ও দশের জন্য মঙ্গল বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা কারও দয়াদাক্ষিণ্য চাই না। আমরা কিট তৈরি করেছি। এটা কতটা কার্যকর, তা পরীক্ষা করে দেখুন। পরীক্ষা না করলে কিটের কার্যকারিতা কী করে বুঝবেন?’
জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, অনুমোদনের জন্য গবেষক ড. বিজন কুমার শীল, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ফিরোজ খান ও গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ মহিবুল্লাহ খন্দকার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরে যান। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান কক্ষ থেকে ফিরোজ খানকে বের করে দেন। তিনি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে কিট পরীক্ষা করিয়ে আনতে বলেন। প্রক্রিয়াটি কেমন জানতে চাইলে ডিজিডিএ তাঁদের একটি ফার্মের কথা বলেন। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র অধিদপ্তরকে উদ্যোগ নিয়ে কিট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) পাঠানোর অনুরোধ করে। কিন্তু তিনি তা নাকচ করে দেন। জাফরুল্লাহ চৌধুরী মনে করেন, তৃতীয় কোনো পক্ষের মাধ্যমে কাজটি করালে কিটের দাম বাড়বে। অনুমোদনের সময়ও লাগবে বেশি।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী মনে করেন, কিটের ব্যাপারে সরকার ও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে কেউ ভুল বোঝাচ্ছে।
এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমানকে ফোন করে ও খুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমতি না নিয়ে গতকাল শনিবার অনুষ্ঠান করা, প্রটোকল অনুসরণ না করা ও অনুমোদনের শর্ত উপেক্ষা করার অভিযোগের জবাবও আজ দেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। কিট নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে বলে যে সমালোচনা হচ্ছে, সে সম্পর্কে মন্তব্য করেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা তো অনুমোদন বা বাজারজাত করার জন্য কাল অনুষ্ঠান করিনি। একটা কিছু আবিষ্কার করেছি, এটা তো আনন্দের ব্যাপার। আপনারা যদি একটু হাততালি দেন, তাহলে আমাদের ভালো লাগবে। বিষয়টি ছিল এমন।’
গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ মহিবুল্লাহ খন্দকার বলেন, অনুমোদনের জন্য যে যে প্রক্রিয়া অনুসরণ করার কথা, সেগুলো পুরোপুরি অনুসরণ করা হয়েছে।
কিট নিয়ে রাজনীতি প্রসঙ্গে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিরোজ আহমেদ জানান, তিনি তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ে নীল দল থেকে নির্বাচিত এবং শিক্ষক সমিতির সভাপতি। তিনি দীর্ঘ ২২ বছর আইসিডিডিআরবিতে কাজ করেছেন। অণুজীববিজ্ঞানী বিজন শীলের সঙ্গে তাঁর আরও পাঁচটি গবেষণাকর্ম আছে। দেশ ও দশের মঙ্গলের জন্য তাঁরা কাজটি করেছেন। রাজনৈতিক কোনো উদ্দেশ্য তাঁদের ছিল না।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এখন কী করবে, জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলেছেন, অনুমোদনের প্রক্রিয়াটা যেন শুরু হয়, সে চেষ্টা তাঁরা চালিয়ে যাবেন।