১০০০ শয্যার আইসোলেশনসহ ১৩ দফা দাবি

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় নারায়ণগঞ্জে করোনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপন, প্রতিদিন ৫০০ নমুনা পরীক্ষা এবং প্রতিটি উপজেলায় ১০০ শয্যাসহ জেলায় ১০০০ শয্যার আইসোলেশন বৃদ্ধিসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছে ‘করোনা দুর্যোগ উত্তরণ সমন্বয় কমিটি’।

আজ বুধবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২ নম্বর রেলগেট এলাকায় জেলা বাসদ কার্যালয়ে রফিউর রাব্বির সভাপতিত্বে জেলার বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের ওই সভায় ওই দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

সভায় বর্তমান করোনা-দুর্যোগে নারায়ণগঞ্জের বাস্তবতা ও অব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। সভায় অনেকেই ভিডিও কনফারেন্স ও টেলিফোনের মাধ্যমেও যুক্ত হন। ওই সভায় রফিউর রাব্বিকে আহ্বায়ক করে ‘করোনা-দুর্যোগ উত্তরণ সমন্বয় কমিটি’ নামে ৭৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

করোনা-দুর্যোগ উত্তরণ সমন্বয় কমিটির অন্যরা হলেন যুগ্ম আহ্বায়ক হচ্ছেন এ বি সিদ্দিক, মোহাম্মদ নূরুদ্দিন, মাহাবুবুর রহমান, রথীন চক্রবর্তী, অসিত বরণ বিশ্বাস, আবদুস সালাম, ভবানী শংকর, হাফিজুল ইসলাম, নিখিল দাস, আওলাদ হোসেন, তরিকুল সুজন, হিমাংশু সাহা, মাহমুদ হোসেন, দুলাল সাহা ও জাহিদুল হক। কমিটির সদস্যরা হলেন হালিম আজাদ, মন্টু ঘোষ, আবদুর রহমান, নাসির উদ্দিন, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, আবু নাঈম, শিবনাথ চক্রবর্তী, জিয়াউল ইসলাম, প্রদীপ ঘোষ, ধীমান সাহা, জহিরুল ইসলাম, শাহেদ কায়েস, রীনা আহমেদ, শাহানারা বেগম, পপি রানী সরকার, রাশিদা আক্তার, অমল আকাশ, বিমল কান্তি দাস, জাকির হোসেন, অঞ্জন দাস, শাহীন মাহমুদ, সেলিম মাহমুদ, কৃতি কণিকা, দীনা তাজরিন, ফারুক মহসিন প্রমুখ।

সভায় বক্তব্য দেন নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সভাপতি এ বি সিদ্দিক, আমরা নারায়ণগঞ্জবাসীর সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি ভবানী শংকর, সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য মন্টু ঘোষ, জেলা সংগঠক বিমল কান্তি দাস, বাসদ জেলা সমন্বয়ক নিখিল দাস, সংগঠক আবু নাঈম, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, শহর সমন্বয়ক অঞ্জন দাস, ওয়ার্কার্স পার্টি জেলা সম্পাদক হিমাংশু সাহা, উদীচী জেলা সভাপতি জাহিদুল হক, সামাজিক সংগঠন সমমনার সভাপতি দুলাল সাহা, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা প্রমুখ।

দাবিগুলো হলো নারায়ণগঞ্জে দ্রুত করোনা পরীক্ষার ল্যাব স্থাপন, প্রতিদিন ন্যূনতম ৫০০ নমুনা পরীক্ষা, করোনা চিকিৎসার জন্য প্রতি উপজেলায় ১০০ শয্যাসহ জেলায় ১০০০ শয্যা আইসোলেশনে উন্নিত করা, চিকিৎসক-নার্সসহ চিকিৎসাকাজে নিয়োজিতদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা নিশ্চিত করা, আপৎকালীন সংকট উত্তরণে জেলায় অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের জরুরি ভিত্তিতে কাজে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ, জেলায় দ্রুত ‘আইসিইউ’ চালু করা এবং অন্তত ১০০ ভেন্টিলেটর মজুত রাখা, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে (ভোটার তালিকা নয়) নারায়ণগঞ্জে নিম্নবিত্ত পরিবারসমূহের তালিকা করে তাদের দ্রুত খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। এ ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের যে তালিকা রয়েছে, তাকে সময়োপযোগী করা, জাতীয় পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে মধ্যবিত্তদের তালিকা করে রেশনিংয়ের মাধ্যমে তাদের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ১০ টাকা কেজিতে চাল ও স্বল্পমূল্যে খাদ্যসামগ্রী নারায়ণগঞ্জ শহর ও উপজেলাসমূহে প্রতিদিন নিয়ম করে বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা, পোশাকশ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত না করে গার্মেন্টস খুলে দেওয়ার মতো আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা। পোশাকশ্রমিকদের চিকিৎসা কারখানা মালিকদেরই নিশ্চিত করা। শ্রমিকদের জন্য মালিক কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনে পৃথক চিকিৎসাকেন্দ্র স্থাপন করা। সরকারি নির্দেশনা গার্মেন্টস কর্তৃপক্ষ মানছে কি না, তা যথাযথভাবে তদারকি করা, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের জন্য ত্রাণ বিতরণে সরকারি কমিটিতে শ্রমিক ফেডারেশনের নেত্রীবৃন্দকে যুক্ত করা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের নিয়মিত তদারকি অব্যাহত রাখা, ডেঙ্গু প্রতিরোধে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনকে মশকনিধন কার্যক্রম বৃদ্ধি করা এবং প্রতিদিন নিয়ম করে তা অব্যাহত রাখা, বিভিন্ন স্থানে করোনায় আক্রান্ত চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও সাধারণ মানুষ যেভাবে সামাজিক প্রতিরোধের শিকার হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে প্রশাসনের শক্ত অবস্থান গ্রহণ করা।