ইউপি কার্যালয়ের ঘর চেয়ারম্যানের বাড়িতে

নতুন ভবন নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) কার্যালয়ের চারচালা টিনের ঘর সরিয়ে ফেলা হয়। এরপর ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের ওই ঘর ইউপি চেয়ারম্যান নিজের বাড়িতে নিয়ে তুলেন। এ ঘটনা মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের।

এই ঘটনাসহ ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসেন ইমামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ইউপির ১১ জন সদস্য।

এদিকে অভিযোগ করায় ইউপি চেয়ারম্যানের লোকজন ইউপি সদস্যদের হুমকি–ধমকি ও ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন কয়েকজন ইউপি সদস্য। তাঁরা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে তদন্ত করে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।

কয়েকজন ইউপি সদস্য জানান, ২০১৭ সালে ইউনিয়ন পরিষদের নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলে চেয়ারম্যান কার্যালয়ের চৌচালা বিশাল টিনের ঘরটি নিজের বাড়িতে নিয়ে উত্তোলন করেন। সরকারি নিয়মনুযায়ী, দরপত্র আহ্বান অথবা কোটেশনের মাধ্যমে নিলামকৃত অর্থমূল্যে ঘরটি সর্বোচ্চ দরদাতা পাওয়ার কথা। অথচ এ ক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। আনুমানিক ১০ লাখ টাকা মূল্যমানের ওই ঘর এখনো চেয়ারম্যানের নিজের বাড়িতেই রয়েছে। উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগও করা হয়েছে।

গত ২০ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, লোকাল গভর্নেন্স সাপোর্ট প্রোগ্রামের (এলজিএসপি) বরাদ্দের ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকায় চেয়ারম্যান নিজের বাড়ির পাশে পুকুরের ঘাটলা নির্মাণ করেছেন। প্রতিবার জেলেদের কার্ডে চাল উত্তোলন করার সময় ২০টি ভুয়া নাম ব্যবহার করে ওই চাল আত্মসাৎ করছেন তিনি। কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচি প্রকল্পে ৩ দশমিক ৫০ মেট্রিক টন চালের মধ্যে মাত্র ১৫ হাজার টাকা খরচ করে এই প্রকল্পের অধিকাংশ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসেন দাবি করেন, সে সময় উপজেলা প্রশাসনের মৌখিক সম্মতিতে ঘরটি তাঁর বাড়িতে তুলেছিলেন। অন্যান্য অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব স্থানীয় সরকার বিভাগের। জেলা স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক ফৌজিয়া খান বলেন, গত বুধবার বিকেলে ওই ইউপি চেয়ারম্যানের অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়ে লিখিত অভিযোগের অনুলিপি তিনি পেয়েছেন। এ ব্যাপারে তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।