নিজের প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে

জন্ম থেকেই এক পা অচল মন্টু চন্দ্র রায়ের (৪০)। তাই দৌড়ঝাঁপের কাজ তেমন করতে পারেন না। বসে বসে করা যায় এমন কাজ শিখেছেন। করেন সাইকেল সারানোর কাজ। আর পাশাপাশি সরকারি অনুদান হিসেবে প্রতি মাসে ৮০০ টাকা পান প্রতিবন্ধী ভাতা। এ দিয়ে চলে তাঁর পাঁচজনের সংসার। কিন্তু করোনার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের কষ্ট তাঁকে তাড়া করে বেড়ায়। তাই নিজের ভাতার জমানো টাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে। শুধু ভাতাই নয়, নিজের পালা গরুও বিক্রি করে সেই অর্থ দিয়েছেন তহবিলে।

মন্টু চন্দ্র রায় দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার গোয়ালডিহি ইউনিয়নের নলবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। স্বামী-স্ত্রী, দুই সন্তান আর মাসহ তাঁর পাঁচজনের সংসার।

আজ শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে খানসামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ-মাহবুব উল ইসলামের হাতে ৩ মাসের প্রতিবন্ধী ভাতার জমানো ২ হাজার ৪০০ টাকাসহ বাড়ির গরু বিক্রি করে মোট সাড়ে ১০ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন তিনি।

মন্টু রায় বলেন, ‘আমি খেটে খাওয়া মানুষ। প্রতিবন্ধী ভাতা ও সাইকেলের মেকারি করে যা আসে, তা দিয়ে সংসার চালাই। কর্ম না থাকলে সংসার চালানো দায় পড়ে অনেকের। বিষয়টি উপলব্ধি করেই ইউএনও স্যারের কাছে আমার জমানো টাকা এবং একটি ছোট গরু বিক্রি করে ত্রাণ তহবিলে টাকাটা জমা দিয়েছি। শুনেছিলাম স্যার সমাজের বিত্তবানদের কাছে সহযোগিতা নিয়ে কর্মহীন মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করছেন। আমার যতটুকু সামর্থ্য ছিল, আমি সহযোগিতা করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে আজ।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহমেদ–মাহবুব উল ইসলাম বলেন, মন্টু রায় স্বপ্রণোদিত হয়ে সরকারি ত্রাণ তহবিলে এই অর্থ জমা দিয়েছেন। তাঁর এ দান অনেককেই অনুপ্রাণিত করবে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও তিনি যে কাজটি করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। এ সময় সমাজের বিত্তবানদের অসহায় ও কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।