করোনা রোগীদের চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু

কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু। ফাইল ছবি
কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীদের ভর্তি রেখে চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু। ফাইল ছবি

ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ১ মে থেকে হাসপাতালটি রোগী ভর্তির কার্যক্রম শুরু করে। এখন পর্যন্ত হাসপাতালটিতে মোট ১৪ জন করোনা রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। যাঁরা ভর্তি হয়েছেন, তাঁরা শাহজাহানপুর ও কমলাপুরের স্থানীয় বাসিন্দা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) চালু নেই বা কোভিড-১৯ শনাক্তকরণের যন্ত্র হাসপাতালে নেই। শুধু যেসব রোগীর কোভিড-১৯ পজিটিভ এসেছে, এমন রোগী তাঁরা ভর্তি করছেন। হাসপাতালটি ৮০ থেকে ১০০ জন রোগী ভর্তি করে চিকিৎসাসেবা দিতে পারবে।

কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সৈয়দ ফিরোজ আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের হাসপাতালটিকে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য তালিকাভুক্ত করে সরকার। সরকারি এই সিদ্ধান্তের পর হাসপাতালের সংস্কারের কাজ করা হয়। আগে হাসপাতালের অন্তর্বিভাগ সেভাবে চালু ছিল না। শুধু বহির্বিভাগে সেবা দেওয়া হতো। ১ মে করোনা রোগীদের ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয় এবং তা চলছে।’

এর আগে গত ৬ এপ্রিল ‘করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালটিতে “শুধু নেই আর নেই”’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রথম আলো অনলাইনে প্রকাশিত হয়। হাসপাতালের শামীম আরা নামের চিকিৎসক তখন বলেছিলেন, হাসপাতালে প্যাথলজির কোনো সেটআপ নেই। নেই মাইক্রোস্কোপ। বলতে গেলে, কাজ করার মতো কিছুই নেই।

তবে এক মাসের মধ্যে কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালে অনেক যন্ত্রপাতি এসেছে। করা যাচ্ছে নানা পরীক্ষাও।

কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালের ঢাকা বিভাগীয় চিকিৎসা কর্মকর্তা (ডিএমও) আই এস আবদুল আহাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক মাস আগেও আমাদের হাসপাতালে অনেক কিছু ছিল না। এখন হাসপাতালে অনেক কিছু এসেছে। আগে ব্লাড টেস্ট করা যেত না, এখন হবে। কারণ, ব্লাড টেস্টের মেশিন এসেছে। আগে এক্স–রে করা যেত না, এখন করা যাবে। আমাদের হাসপাতালে আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন এসেছে। প্যাথলজি বিভাগের জন্য নতুন নতুন কিছু মেশিন এসেছে। করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আমাদের হাসপাতালটি নির্ধারিত করার পর সরকার আমাদের হাসপাতালে অনেক যন্ত্রপাতি দিয়েছে।’

ডিএমও আই এস আবদুল আহাদ জানান, হাসপাতালটির আইসিইউ এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি। অপারেশন থিয়েটারও পুরোপুরি চালু করা যায়নি। শিগগিরই এসব চালু করা সম্ভব হবে।

কমলাপুর রেলওয়ে জেনালে হাসপাতালে আগে থেকে রেলওয়ে বিভাগের নয়জন চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন । স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন তিনজন। তবে কমলাপুর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালটি করোনা রোগীদের চিকিৎসাকেন্দ্র নির্ধারণ করার পর সরকারের পক্ষ থেকে হাসপাতালটিতে নতুন করে আরও ২২ জন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে হাসপাতালে এখন চিকিৎসকের সংখ্যা ৩৪।

হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক সৈয়দ ফিরোজ আলমগীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘অনেক চড়াই-উৎরাই পার করে হাসপাতালে রোগী ভর্তির কার্যক্রম শুরু করেছি। যেসব করোনা রোগী আমাদের হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, তাঁদের সবারই শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে।’

কমলাপুর রেলস্টেশনের পাশে অবস্থিত পাঁচ একর জায়গায় বাংলাদেশ রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল। ৩৪ বছর আগে (১৯৮৬) হাসপাতালটির জন্ম। শুরুতে হাসপাতালটির নাম ছিল বাংলাদেশ রেলওয়ে হাসপাতাল। হাসপাতালটিতে তখন শুধু রেলওয়ের কর্মীরা চিকিৎসাসেবা পেতেন। পাঁচ বছর আগে (২০১৫) অন্যান্য সরকারি হাসপাতালের মতো চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য রেলওয়ে হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতাল।