করোনায় আক্রান্ত কর্মীর চিকিৎসার দায়িত্ব গণমাধ্যমের, বলল বিএফইউজে-ডিইউজে

সংবাদকর্মীদের স্বাস্থ্যগত সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গণমাধ্যমমালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সাংবাদিকদের দুটি ইউনিয়ন বলেছে, কোনো সংবাদকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাঁর চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয় সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে। একই সঙ্গে করোনায় আক্রান্ত সংবাদকর্মীর পরিবারকে দেখভাল করা ছাড়াও মৃতের পরিবারকে ন্যূনতম ৫০ লাখ টাকা নগদ দিতে হবে।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশের জরুরি সভায় এ বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তা মালিকপক্ষকে অবগত করার কথা বলা হয়েছে। আজ শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো গণমাধ্যমমালিক সংবাদকর্মীদের সুরক্ষায় উপরিউক্ত দায়িত্ব পালনে অস্বীকৃতি জানালে ক্ষতিগ্রস্ত সংবাদকর্মীর পরিবারের পক্ষ থেকে করা মামলায় সাংবাদিক ইউনিয়ন সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

আজকের সভায় ঈদুল ফিতরের আগেই সংবাদকর্মীদের বকেয়াসহ চলতি মাসের বেতন ও উৎসব ভাতা দেওয়ার দাবি জানানো হয়। সভায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলা হয়, বেতন-ভাতা প্রদানের জন্য গণমাধ্যমমালিকদের প্রতি বারবার আহ্বান জানানো সত্ত্বেও তাঁরা কর্ণপাত করছেন না। এমনকি আলোকিত বাংলাদেশ, জিটিভি, এসএটিভি, ইউএনবি, এশিয়ান টিভিসহ একাধিক গণমাধ্যমে ছাঁটাই, বেতন কর্তনসহ বিভিন্নভাবে সংবাদকর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে সাংবাদিক ইউনিয়ন কর্মবিরতি ও ধর্মঘটের মতো কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবে।

সভায় বলা হয়, সংবাদকর্মীদের আর্থিক সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে গত ১ এপ্রিল আবেদন জানানো হলেও কার্যকর সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। তথ্যমন্ত্রী কেবল আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন। এমতাবস্থায় এই আপৎকালে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরিচ্যুত, কর্মহীন ও ন্যায্য বেতন-ভাতা থেকে বঞ্চিত সংবাদকর্মীদের দুশ্চিন্তা বাড়ছে।

এই দুর্যোগের সময় সংবাদপত্র ও টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন নোয়াব ও অ্যাটকোর ভূমিকার সমালোচনা করে বলা হয়, করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে তিনজন সাংবাদিকের মর্মান্তিক মৃত্যু এবং অন্তত ৮০ জন গণমাধ্যমকর্মী আক্রান্ত হলেও ওই দুটি সংগঠন এবং সম্পাদক পরিষদ দুর্দশাগ্রস্ত সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়ায়নি, এমনকি করোনায় মারা যাওয়া সাংবাদিকের জন্য একটি শোক বিবৃতি দেয়নি।

বিএফইউজের একাংশের সভাপতি মোল্লা জালাল সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভা সঞ্চালনা করেন ডিইউজের একাংশের সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ। করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে সারা দেশের সংবাদকর্মীদের সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে বক্তব্য দেন বিএফইউজে মহাসচিব শাবান মাহমুদ ও ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান।

সভায় করোনার উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর, মাহমুদুল হাকিম ও আসলাম রহমানের বিদেহী আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।