সরিষাবাড়ীতে মেয়র ও কাউন্সিলরদের সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তি

জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌরসভার মেয়র ও কাউন্সিলরদের সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটেছে। মেয়র তাঁর লোকজন নিয়ে পৌরসভায় ঢোকার চেষ্টা করলে কাউন্সিলররা তাঁকে বাধা দেন। এতে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে কিল-ঘুষির ঘটনা ঘটে। আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পৌরসভা প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ১ মে পৌরসভার মেয়র মো. রুকুনুজ্জামানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি, অসদাচরণ, ক্ষমতার অপব্যবহার, স্বেচ্ছাচারিতা, মারমুখী আচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগে সব কাউন্সিলর তাঁর প্রতি অনাস্থা জানান। একই সঙ্গে পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি পদ থেকেও তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর থেকে তিনি পৌরসভায় যাচ্ছিলেন না। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেয়র রুকুনুজ্জামান তাঁর লোকজন নিয়ে পৌরসভায় ঢোকার চেষ্টা করেন। এ সময় প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী ও সব কাউন্সিলের সমর্থকেরা মেয়রকে বাধা দেন। এতেই উভয় পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে প্রথমে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কিল-ঘুষির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

পৌরসভার প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘পৌরসভার মেয়র একজন দুর্নীতিগ্রস্ত লোক। তিনি একক ক্ষমতায় পৌরসভার সব কার্যক্রম পরিচালনা করেন। প্রতিবাদ করলে সব সময় তিনি মারমুখী আচরণ করেন। সারাক্ষণ তাঁর সঙ্গে একটি বাহিনী থাকে। তাঁর নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে আমরা সবাই তাঁর প্রতি অনাস্থা জানাই। এরপর থেকে তিনি আর পৌরসভায় আসছিলেন না। আজ তিনি তাঁর বাহিনী নিয়ে পৌরসভায় ঢোকেন। এ সময় কাউন্সিলররা তাঁর কাছে ১৩ মাসের বকেয়া সম্মানী ভাতা চান। এতে তিনি চরমভাবে ক্ষিপ্ত হন। তাঁর সঙ্গে থাকা লোকজন আমাদের ওপর চড়াও হন। তিনিও নানা রকম গালিগালাজ করতে থাকনে। আমাকেসহ কাউন্সিলরদের নানা রকম হুমকি দেন। পরে তিনি পৌরসভায় ঢোকার চেষ্টা করেন, কিন্তু কাউন্সিলর ও কর্মচারীরা তাঁকে ঢুকতে দেননি। এতেই তাঁর লোকজন আমাদের কিল-ঘুষি মারেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।’


মেয়র মো. রুকুনুজ্জামান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সন্ত্রাসী বাহিনী আমাকে পৌরসভায় ঢুকতে দেয়নি। অন্যায়ভাবে আমার ওপর হামলা করেছিল। আমার দেহরক্ষীকে মারধর করা হয়েছে। আমি ভালো কাজ করছিলাম। এটাই আমার অপরাধ। তাঁরা অন্যায়ভাবে আমার সঙ্গে এমন করছে। আমার আহত লোকজনকে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু হাসপাতালে নিতেও তারা বাধা সৃষ্টি করেছে। আমার উন্নয়নকাজকে তারা বাধাগ্রস্ত করছে।’

সরিষাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘পৌরসভার কাউন্সিলররা মেয়রকে অনাস্থা দিয়েছেন। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। মেয়র আজ পৌরসভায় অফিস করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাউন্সিলররা তাঁকে ঢুকতে দেননি। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। আমরা গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করি এবং সেখান থেকে সরিয়ে দিই। পরে মেয়র বাসায় চলে যান।’