সিংড়ায় চাষিদের কুমড়া কিনে ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করছে প্রশাসন
নাটোরের সিংড়া উপজেলা প্রশাসন সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে চালকুমড়া কিনে মঙ্গলবার ৫ হাজার ৪০০ দুস্থ ব্যক্তির মধ্যে ত্রাণ হিসেবে বিতরণ করেছে। এতে কৃষকেরা পানির দরে কুমড়া বিক্রি করা থেকে যেমন বেঁচেছেন, তেমনি দুস্থ ব্যক্তিদেরও সবজির চাহিদা মিটছে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সিংড়ার খরসুতি ও মহেষচন্দ্রপুর এলাকায় চালকুমড়ার ব্যাপক আবাদ হয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে চাষিরা উৎপাদিত কুমড়া ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে পারছেন না। বাইরে থেকে ক্রেতা না আসায় খুব কম দামে স্থানীয় বাজারে এসব কুমড়া বিক্রি হচ্ছিল। মাঝেমধ্যে ক্রেতার অভাবে চাষিদের কুমড়া ফেলে দিতেও হয়েছে। বিষয়টি জানার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তাকে কৃষকদের কাছ থেকে সরাসরি কুমড়া কিনে তা ত্রাণ হিসেবে বিতরণের পরামর্শ দেন। তাঁর পরামর্শে কৃষি কর্মকর্তা সোমবার খরসুতি ও মহেষচন্দ্রপুরের বিভিন্ন চাষির কাছ থেকে বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে ছয় হাজারটি চালকুমড়া কেনেন। আজ মঙ্গলবার উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের ৫ হাজার ৪০০ দুস্থ ব্যক্তির মধ্যে অন্যান্য ত্রাণের সঙ্গে এসব চালকুমড়া বিতরণ করা হয়। বাকি কুমড়াও ত্রাণ হিসেবে বিলি করা হয়েছে।
খরসুতি গ্রামের কুমড়াচাষি ওয়াসিম আলী জানান, বর্তমানে তাঁর জমি থেকে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০ কুমড়া উঠছে। আগে পাইকাররা জমিতে এসে প্রতিটি কুমড়া ১০ থেকে ১৫ টাকা করে কিনে নিয়ে যেতেন। এখন করোনার কারণে পাইকারেরা আসছেন না। বাজারে নিয়ে গেলে স্থানীয় আড়তদারেরা প্রতিটি পাঁচ থেকে ছয় টাকার বেশি দাম দেন না। এতে প্রতিদিন তাঁর অন্তত পাঁচ হাজার টাকা লোকসান হচ্ছিল। কৃষি অফিস থেকে প্রতিটি ১০ টাকা করে কিনে নিয়ে গেছে। এতে তাঁর উপকার হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সিংড়ায় এবার ১২০ হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষ হয়েছে। কুমড়ার ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে চাষিরা দাম পাচ্ছেন না। তাই ত্রাণ হিসেবে কুমড়া কেনা শুরু করা হয়েছে। এতে চাষির পাশাপাশি দুস্থ ব্যক্তিরাও লাভবান হবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু বলেন, খয়রাতি তহবিল থেকে নগদ টাকা দিয়ে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের জমি থেকে চালকুমড়া কিনে তা ত্রাণ হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। ক্রেতা না থাকায় কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। এ উদ্যোগে তাঁরা কিছুটা লাভবান হচ্ছেন। ত্রাণ গ্রহীতাদেরও সবজির চাহিদা মিটছে। এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।