তাঁদের নামে কার্ড আছে, চাল তোলা হচ্ছে অথচ তাঁরা জানেনই না

জেলা-উপজেলায় সরকারের মানবিক সহায়তা প্রাপ্যদের তালিকাভুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন অসহায় ও গরিব এই মানুষগুলো। কিন্তু তাঁদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে তাঁরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে বলা হয়, তাঁরা সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির সুবিধা ভোগ করছেন। অথচ এই মানুষগুলো তাঁদের নামে কার্ড আছে, সেই কার্ডে চাল তোলা হচ্ছে এর কিছুই জানেন না।

আজ বুধবার দুপুরে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। নিজের নামে কার্ড আছে কিন্তু তাঁরা জানেন না এমন ১৫ জন আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা নির্বাহী বরাবর অভিযোগ দাখিল করেন। ঘটনার বৃত্তান্ত উল্লেখ করে কর্মসূচির দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই ডিলারের বিরুদ্ধে চাল আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। এই ১৫ জনের মধ্যে একজন মহিলা ইউপি সদস্যও রয়েছেন।

জেলা-উপজেলায় সরকারের মানবিক সহায়তা প্রাপ্যদের তালিকাভুক্তির প্রস্তুতির কাজ চলছে। নিয়ম হলো সরকারের ভিজিডি কিংবা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মানবিক সহায়তা কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবেন।

অভিযোগ ওঠা দুই ডিলার হলেন উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হোসেন বাহাদুর ও ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য রহিমুল ইসলাম। লিখিত অভিযোগে বলা হয়, তাঁরা কোনো দিনই খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল উত্তোলন করেননি। এমনকি তাঁরা জানেন না যে তাঁদের নামে কার্ড আছে।

ইউপি সদস্য পারুল বেগম বলেন, ‘আমি সুষ্ঠুভাবে বণ্টন করি অথচ আমার নামেও কার্ড ইস্যু করে চাল উত্তোলন করা হচ্ছে।’ এই কাজে জড়িত ডিলারদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করেন তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সহকারী ভূমি কমিশনার রমিজ আলমকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে পুনরায় সব অভিযোগকারীর অভিযোগ শোনার পর ডিলারদের ডাকি। কিন্তু তারা মুঠোফোন বন্ধ করে পালিয়ে যায়।’

ইউএনও আরও বলেন, এই চাল উপকারভোগীদের মধ্যে বিতরণ না করে দীর্ঘদিন ডিলাররা আত্মসাৎ করেছেন। প্রাথমিকভাবে ১৫ জনের নাম পাওয়া গেছে। আরও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্ত ডিলারদের নামে চাল আত্মসাৎ করার কারণে উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক মো. ফিরোজ আহাম্মেদ মোস্তফা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।