দুর্যোগ তহবিলে টাকা তুলে দিল স্কুলছাত্র দুই ভাই

ঈদে দুস্থদের জন্য নতুন কাপড় কিনতে জেলা প্রশাসকের কাছে টাকা তুলে দেয় দুই ভাই। ঠাকুরগাঁও, ১৭ মে। ছবি: সংগৃহীত
ঈদে দুস্থদের জন্য নতুন কাপড় কিনতে জেলা প্রশাসকের কাছে টাকা তুলে দেয় দুই ভাই। ঠাকুরগাঁও, ১৭ মে। ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ‘জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল’–এ দুস্থদের জন্য ঈদের কেনাকাটার টাকা তুলে দিয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের দুই ভাই। রোববার ওই দুই ভাই বাবাকে সঙ্গে নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) কে এম কামরুজ্জামান সেলিমের হাতে তুলে টাকা দেয়। জেলা প্রশাসক টাকা নিয়ে তাদের একটি স্মারক উপহার দেন।

ওই দুই ভাই হলো আসিফ ফারহান ও আবির ফারহান। আসিফ পাবনা ক্যাডেট কলেজের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। আর আবির ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। তারা ঠাকুরগাঁও শহরের ক্লাবপাড়ার বাসিন্দা ফরহাদুল ইসলাম ও আয়শা আকতারের সন্তান।

আসিফ ফারহান বলে, ‘করোনা পরিস্থিতিতে এখন মানুষ খাবারের জন্য কষ্ট পাচ্ছে, তা টেলিভিশনে দেখে ঈদে নতুন পোশাক না কিনে, সেই টাকা দুস্থদের জন্য দিয়েছি।’

দুই ভাইয়ের বাবা ফরহাদুল ইসলাম বলেন, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সব বাড়িতেই এখন কমবেশি আলোচনা হচ্ছে। তাঁদের দুই ছেলে দুস্থদের নতুন পোশাক কেনার জন্য ঈদে বরাদ্দ দেওয়া পুরো টাকাটাই জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিলে জমা দিতে চায়। প্রথমে মনে হচ্ছিল ওরা দুষ্টুমি করেই এসব বলছে। পরে ওদের জোরাজুরিতে তিনি ছেলেদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে হাজির হন। দুই ছেলের জন্য বরাদ্দ করা ১০ হাজার টাকা জেলা প্রশাসকের হাতে তুলে দেন।

জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণায় অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সরকারের পাশাপাশি এসব মানুষের পাশে দাঁড়াতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে “দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তহবিল” গঠন করা হয়। সেই তহবিলে বিত্তবানদের অনুদান দিতে আহ্বান জানানো হয়েছে। অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। কিন্তু ঈদের পোশাক কেনার টাকা দিয়ে শিশুরা এগিয়ে আসবে, এটা ভাবিনি। এটা একটি দৃষ্টান্ত। পাশাপাশি দুর্যোগের সময় মানুষের পাশে দাঁড়াতে শিশুদের উৎসাহ বাড়াবে।’