গাজীপুর থেকে গ্রামে ফিরে পুলিশ সদস্য আক্রান্ত

শরীয়তপুরে গতকাল রোববার চারজন কোভিড–১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজন নারী পুলিশ সদস্য (২২) রয়েছেন। তিনি গাজীপুর জেলা পুলিশের কনস্টেবল। তাঁর বাড়ি শরীয়তপুর সদর উপজেলার একটি গ্রামে। ১১ মে তিনি বাড়িতে আসেন। জ্বর অনুভব করলে স্বজনেরা চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

গতকাল বিকেলে স্বাস্থ্য বিভাগ জানতে পারে, ওই নারী করোনায় সংক্রমিত। রাতে সদরের পালং থানার পুলিশ তাঁর পরিবারকে খাদ্যসহায়তা দিয়ে বাড়িটি লকডাউন করে দেয়।

শরীয়তপুর স্বাস্থ্য বিভাগ ও জেলা পুলিশ সূত্র জানায়, সদর উপজেলার একটি ইউনিয়নের বাসিন্দা ওই নারী পুলিশ সদস্য। তিনি ২০১৮ সালে গাজীপুর জেলা পুলিশে কনস্টেবল পদে যোগ দেন। বর্তমানে কর্মরত আছেন গাজীপুরের বাসন থানায়। দায়িত্ব পালন করার সময় অসুস্থ বোধ করলে গত সোমবার (১১ মে) ছুটি নিয়ে তিনি গ্রামের বাড়ি চলে আসেন। জ্বর থাকায় গত বুধবার তিনি শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসকের কাছে আসেন। তিনি গাজীপুর থেকে এসেছেন ও শরীরে জ্বর ছিল—এ দুই কারণে তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়।

গতকাল ফলাফলে দেখা যায়, তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল রাতে পালং মডেল থানার পুলিশ ওই পুলিশ সদস্যর বাড়ি লকডাউন করেছে। পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম উদ্দিন তাঁর পরিবারের সদস্যদের খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন।

এ নিয়ে শরীয়তপুরে এ পর্যন্ত ৭১ ব্যক্তি করোনায় সংক্রমিত হলেন। তাঁদের মধ্যে দুই ব্যক্তি মারা গেছেন। আর এখন পর্যন্ত ২২ ব্যক্তি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই নারী পুলিশ সদস্য সম্প্রতি কর্মস্থল থেকে গ্রামে আসেন। জ্বর অনুভব হলে চিকিৎসকেরা তাঁর নমুনা সংগ্রহ করেছেন। তাঁর করোনা পজিটিভ হলে আমরা তাঁর বাড়িতে ছুটে যাই। তাঁকে মনোবল শক্ত রাখার, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়ার জন্য বলা হয়। এ আপৎকালীন সময়ে যাতে তাঁর পরিবার কোনো কষ্টে না থাকে, এ জন্য নানা ধরনের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে।’

শরীয়তপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের করোনা কন্ট্রোল রুমের ফোকাল পারসন আব্দুর রশিদ বলেন, শরীয়তপুরে যাঁরা করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, তাঁরা সবাই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। জেলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮৩৫ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আর যাঁরা বিভিন্ন জেলা থেকে আসছেন, তাঁদের বাধ্যতামূলকভাবে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি ও তাঁর সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের কঠোরভাবে লকডাউন মানতে বাধ্য করা হচ্ছে।