দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ রাতে চালু, দিনে বন্ধ

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

যাত্রী ও যানবাহন পারাপার ঠেকাতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া এবং মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট কর্তৃপক্ষ একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। দিনে সীমিত আকারে জরুরি গাড়ি পারাপারে ছোট দুটি ফেরি চালু রাখা হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা পণ্যবাহী গাড়ির লাইন পাঁচ কিলোমিটার ছাড়িয়ে যায়। এমন পরিস্থিতির মধ্যে গতকাল গতকাল মঙ্গলবার সারা রাত পারাপার শেষে আজ বুধবার ভোর থেকে আবার সম্পূর্ণভাবে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনা–পরিস্থিতি বিবেচনায় যাত্রী বা যানবাহন পারাপার নিয়ন্ত্রণ করতে ঘাটসংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠান বারবার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করছে। গতকাল দিনের বেলায় অনেকক্ষণ বিরতি দিয়ে দুটি ইউটিলিটি (ছোট) ও একটি মাঝারি ফেরি চালু রাখা হয়। সাধারণ যেকোনো যানবাহন ও যাত্রী পারাপার ঠেকাতে অন্য সব ফেরি বন্ধ রাখা হয়। শুধু রোগীবাহী বা লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স পারাপারে ছোট দুটি ফেরি চালু রাখা হয়। কিন্তু যখনই এসব ছোট ফেরি জরুরি গাড়ি নিয়ে ঘাট ছেড়ে যায়, তখনই ঘাটে অপেক্ষমাণ মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ে। মানুষের ভিড়ে ফেরিতে দাঁড়ানোর ঠাঁই থাকে না। পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ থাকায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে দৌলতদিয়া ফেরিঘাট থেকে ঢাকাগামী গাড়ির লাইন গোয়ালন্দ বাজার ছাড়িয়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ হয়।

ফেরির পাশাপাশি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় মানুষভর্তি হয়ে পারাপার হতে থাকে। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে গতকাল সকালে পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা একটি ছোট ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। ট্রলারে থাকা যাত্রীদের স্থানীয় জেলেরা উদ্ধার করেন। এ সময় ঈদে ঘরমুখী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের অনেকের টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র খোয়া যায়।

গতকাল দিন শেষে পণ্যবাহী ঢাকাগামী গাড়ির লাইন গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদ ছাড়িয়ে ছয় কিলোমিটার লম্বা হয়। এদিকে উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার না করার সিদ্ধান্তে মহা বিপাকে পড়েন এসব গাড়ির চালক। সন্ধ্যার পর সব ফেরি বন্ধ করে দিয়ে এই রুটের পরিবর্তে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। বাধ্য হয়ে অনেকে গাড়ি ঘুরিয়ে বঙ্গবন্ধু সেতুর দিকে রওনা করেন। পরে রাত সাড়ে ১১টা থেকে পুনরায় এসব গাড়ি ফেরিতে পারাপারের সিদ্ধান্ত হয়। এমন সিদ্ধান্তে রাতভর সব পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার করা হয়। আজ ভোর ছয়টা পর্যন্ত উভয় ঘাটে আটকে থাকা গাড়ি পারাপার করা হলে ঘাট যানবাহনশূন্য হয়। ভোর ছয়টার পর থেকে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তে আবার সব ধরনের ফেরি বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে জরুরি লাশ বা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স পারাপারে পড়ন্ত বেলায় এক-দুটি ছোট ফেরি চালু রাখা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক মাহাবুব আলী সরদার বলেন, গতকাল সারাদিন পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া প্রান্তে কয়েক শ গাড়ি আটকা পড়ে। সন্ধ্যার পর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে এসব গাড়ি বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। রাত সাড়ে ১১টা থেকে সব ফেরি চালু রেখে দ্রুত আটকে থাকা গাড়ি পারাপারের সিদ্ধান্ত আসে। এরপর রাতভর সব গাড়ি পারাপার করা হয়। আজ ভোর ছয়টা থেকে আবার সব ফেরি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে জরুরি অ্যাম্বুলেন্স বা লাশবাহী গাড়ি পারাপারের ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থায় এক-দুটি ছোট ফেরি ছাড়া হতে পারে।