শিমুলিয়ায় ঘাটে যানবাহনের জন্য ফেরির অপেক্ষা

মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে এসেই ফেরিতে উঠছে যানবাহন। আজ বেলা ১২টায়। ছবি: ফয়সাল হোসেন
মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে এসেই ফেরিতে উঠছে যানবাহন। আজ বেলা ১২টায়। ছবি: ফয়সাল হোসেন

ঈদের বাকি আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। এমন সময় মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সামলাতে হিমশিম খেত ঘাট কর্তৃপক্ষকে। এবার উল্টো চিত্র। যাত্রী ও ঘাট কর্তৃপক্ষ বলছে, ঈদের আগে এমন ফাঁকা ঘাট কেউ আগে কখনো দেখেনি।

রোববার সকাল ১০ থেকে বেলা পৌনে ১টা পর্যন্ত শিমুলিয়ার চারটি ঘাট ঘুরে দেখা যায়, যাত্রী ও যানবাহন স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অনেক কম। চারটি ঘাটের টার্মিনাল ফাঁকা। ঘাটে অপেক্ষমাণ ছয়টি ফেরি। যাত্রী ও যানবাহন আসামাত্র ফেরিতে উঠে যাচ্ছে। ফেরি লোড হলে সেটা কাঁঠালবাড়ি ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাচ্ছে।

শিমুলিয়া ঘাটের যানবাহন ও যাত্রী পারাপারের ব্যবস্থাপনায় থাকা কয়েকজন পুলিশ সদস্য জানান, কয়েক দিন আগেও এখানে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের প্রচণ্ড চাপ ছিল। শনিবার রাতে ও আজ রোববার সকালে হালকা চাপ ছিল। সকাল ৯টার পর থেকে ঘাট একেবারে ফাঁকা বললেই চলে।

শিহাবুল ইসলাম নামে এক যাত্রী জানান, তিনি ও তাঁর স্ত্রী নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থেকে এসেছেন। যাবেন মাদারীপুর শহরের বাড়িতে। ৭-৮ বছর ধরে ঈদের আগে এ ঘাট দিয়ে তার যাতায়াত। ঈদের মাত্র একদিন আগে এমন ফাঁকা ঘাট কখনো তিনি দেখেনি।

ফাঁকা পড়ে আছে মুন্সিগঞ্জ শিমুলিয়া ঘাটের টার্মিনালগুলো। আজ রোববার সকাল ১০টায়। ছবি: ফয়সাল হোসেন
ফাঁকা পড়ে আছে মুন্সিগঞ্জ শিমুলিয়া ঘাটের টার্মিনালগুলো। আজ রোববার সকাল ১০টায়। ছবি: ফয়সাল হোসেন

মো. দুলাল নামে আরও একজন যাত্রী বলেন, তিনি রাজধানীর সায়েদাবাদ একটি সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। যাবেন গোপালগঞ্জ শহরে। প্রতিবার রাস্তায় রাস্তায় যানজটের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হতো। এবার কোনো ভোগান্তি ছাড়াই ফেরিতে উঠতে পেরেছেন।

প্রাইভেট কারের যাত্রী সাবিনা ইয়াসমিন জানান, তিনি মগবাজার থেকে এসেছেন। গত ঈদে যখন ঘাটে এসে প্রায় ১৪ ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে ওঠেন। এবার রাস্তা ফাঁকা। ঘাটেও গাড়ি নেই। তিন নম্বর ফেরি ঘাটে তিনটি ফেরি নোঙর করা ছিল। পছন্দমতো ফেরিতে উঠেছেন।

ট্রাফিক পুলিশের এএসপি নাজমুল রায়হান জানান, গতকাল প্রায় ২২০০ যানবাহন এ ঘাট দিয়ে পাড় হয়েছে। রোববার সকাল থেকে মাত্র ২০০ গাড়ির পাড় হয়েছে। এবার চাপ নেই বললেই চলে। যাত্রী ও যানবাহন ঘাটে আসছে। কোনো অপেক্ষা ছাড়া সুশৃঙ্খলভাবে ফেরিতে উঠে নদী পার হতে পারছে।

মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার আবদুল মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, যাত্রীদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে ও করোনা প্রতিরোধে গত দুই মাস ধরে পুলিশ অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। দেশে সাধারণ ছুটি থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের অনেক মানুষ আগেই বাড়ি চলে গেছে। এ ছাড়া বহু মানুষ সরকারি নির্দেশনা মেনে যেখানে আছেন সেখানেই অবস্থান করছেন। দীর্ঘ ছুটি, পুলিশের পরিশ্রমের কারণে ঘাটে এবার চাপ অনেক কম।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কয়েক দিন আগে ঘাটে যাত্রীদের খুব চাপ ছিল। যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ১৫টি ফেরি রয়েছে। ঘাট ফাঁকা। যাত্রীদের অপেক্ষায় ফেরিগুলো এখন বসে আসে।