ভ্যান রাখা নিয়ে সংঘর্ষ, ওসিসহ আহত ৪৫

দোকানের সামনে ভ্যান রাখা নিয়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলায় দুপক্ষের সংঘর্ষে ওসিসহ ৪৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। আজ মঙ্গলবার বনগ্রাম বাজার ও আইকদিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দুজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ১২ জনকে মুকসুদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় কয়েকজন জানান, বনগ্রাম বাজারে মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের ছেলে আলমগীর মিয়ার ওষুধের দোকানের সামনে মহারাজপুর গ্রামের চালক বাবলু খানের ব্যাটারিচালিত ভ্যান রাখা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। এর জের ধরে বনগ্রাম বাজার ও আইকদিয়া বাজারে দুপক্ষের লোকজন দুই দফায় সংঘর্ষে লিপ্ত হন।

মহারাজপুর ইউপির চেয়ারম্যান মো. হাসু বলেন, গতকাল সোমবার ঈদের রাতে তাঁর ছেলে আলমগীর বনগ্রাম বাজার থেকে ওষুধের দোকান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলেন। তখন মহারাজপুর গ্রামের বাবলু খান পেছন থেকে ভ্যান চালিয়ে এসে আলমগীরের গায়ে লাগিয়ে দেন। এর প্রতিবাদ করলে বাবলুসহ কয়েকজন আলমগীরকে মারধর করেন। তাৎক্ষণিকভাবে কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি আলমগীরের কাছে বাবলুকে ক্ষমা চাইতে বলেন। এতে বাবলুর আত্মসম্মানে বাঁধে। আজ সকালে আলমগীর বনগ্রাম বাজারে দোকানে যান। সেখানে বাবলু ও তাঁর লোকজন আলমগীরকে মারধর করে তাঁর মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেন। পরে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে দুপক্ষের ২৫ জন আহত হন। মুকসুদপুর থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বনগ্রাম বাজারের পাশের আইকদিয়া ও পাইকদিয়া গ্রামে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও তিন পুলিশ সদস্যসহ আরও ২০ জন আহত হন। পুলিশ প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও বাবলু খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর পক্ষের একজন বলেন, দোকানের পাশে ভ্যান রাখা নিয়ে আলমগীরের সঙ্গে বাবলুর ঝগড়া হয়। এর জের ধরে সংঘর্ষ ঘটে।

এ বিষয়ে মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, সংঘর্ষ থামাতে শটগানের ৪৮টি ও কাঁদানে গ্যাসের ২টি গুলি ছোড়া হয়। আইকদিয়া গ্রামে উভয় পক্ষের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। এতে আমিসহ চার পুলিশসদস্য আহত হন। তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।