নান্দাইলে বিধবার ভাতা তুলে খাচ্ছেন কে?

ময়মনসিংহ
ময়মনসিংহ

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় এক নারীর বিধবা ভাতা অন্য কেউ তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই নারীর নাম আমেনা খাতুন (৫৫)। তিনি উপজেলার রহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা এবং ওই গ্রামের মৃত ওয়াহেদ আলী স্ত্রী।

যার বিরুদ্ধে বিধবা ভাতা তুলে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে তিনি হলেন উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সদস্য মো. আবুদল করিম। গতকাল বুধবার অভিযোগের বিষয়ে জানতে তাঁর বাড়িতে গেলে তিনি তা অস্বীকার করেন। তবে তিনি নানা কাজে সোনালী ব্যাংক নান্দাইল শাখায় যান বলে জানান। ওই শাখা থেকে বিধবা ভাতার টাকা ছাড় হয়।


আমেনা খাতুন বলেন, প্রায় ২০ বছর আগে তাঁর দিনমজুর স্বামী ওয়াহেদ আলী মারা যান। আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল করিম তাঁর প্রতিবেশী। সুবিধা পাওয়ার আশায় প্রায় পাঁচ বছর আগে তাঁর হাতে জাতীয় পরিচয়পত্রটি দিয়েছিলেন তিনি। পরিচয়পত্রটি ফেরত পেলেও তিনি এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি সুবিধা পাননি।

উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আমেনা খাতুন ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি সামাজিক নিরাপত্তা খাতের ভাতাপ্রাপ্তদের তালিকাভুক্ত হয়েছেন। ওই সময় থেকে তাঁর নামে সরকারিভাবে ভাতা ছাড় করা হচ্ছে। তাঁর পাসবই নম্বর ৫৪৫৫/১। ব্যাংক হিসাব নম্বর ১৫৮৪, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড নান্দাইল শাখা। এ পর্যন্ত তাঁর নামে ৩১ হাজার ২০০ টাকা ভাতা ছাড় করা হয়েছে।


উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইনসান আলী বলেন, সম্প্রতি ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয় যে পাসবইয়ে থাকা ছবি দেখে ও পরিচয় নিশ্চিত হয়ে যেন ভাতার অর্থ তুলে দেওয়া হয়।

আমেনা খাতুনের ভাষ্য, রোজার মাসে আবদুল করিম তাঁকে ব্যাংকে নিয়ে যান। তখন তাঁর হাতে কোনো পাসবই ছিল না। কিন্তু ব্যাংক থেকে তাঁর নাম ও স্বামীর নাম ধরে ডেকে নেওয়া হয়। ব্যাংক থেকে তাঁর হাতে তিন হাজার টাকা দেওয়া হয়। তবে আবদুল করিম পুরো টাকা তাঁর হাত থেকে নিয়ে যান। তাঁকে ২০০ টাকা দিয়ে একটি অটোরিকশায় তুলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। তিনি পুরাে ঘটনা তাঁর বড় ছেলে রফিকুল ইসলামকে বলেন। পরে রফিকুল সমাজসেবা কার্যালয়ে গিয়ে বিষয়টি জানান।


উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. ইনসান আলী বলেন, তিনি অভিযোগ পেয়ে রহিমপুর গ্রামে গিয়ে আমেনা খাতুনের সঙ্গে কথা বলেন। ওই নারী বিধবা ভাতা পাওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত হলেও পাসবইটি তাঁর হাতে নেই বলে তিনি নিশ্চিত হন। তাঁর পাসবইটি কার কাছে রয়েছে তা জানার জন্য তদন্ত করা হবে। তদন্তে ভাতা আত্মসাতের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় উপজেলা মনিটিরিং কমিটির সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।