করোনায় ত্রাণ দেওয়ার কথা বলে চাঁদাবাজির অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও অরুয়াইল বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আবু তালেবের বিরুদ্ধে ত্রাণ দেওয়ার কথা বলে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আজ শনিবার বাজারের ব্যবসায়ীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

জানতে চাইলে অরুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘অরুয়াইল এ উপজেলার সর্ববৃহৎ বাজার। এখানে ছোট–বড় প্রায় এক হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। প্রতি পাঁচ বছর পরপর সরকারিভাবে বাজারের কমিটি হয়ে থাকে। পদাধিকার বলে আমি কমিটির সভাপতি। কিন্তু কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমাকে কিছু না জানিয়ে ইচ্ছেমতো নানা অজুহাতে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা তুলে থাকেন। আমরা এসব ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিকার চাই।’

লিখিত অভিযোগে অরুয়াইল বাজারের ১৬০ জন ব্যবসায়ী সই করেছেন। এতে বলা হয়, আবু তালেব ২৩ বছর ধরে অরুয়াইল বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি নানা অজুহাতে বাজারে চাঁদাবাজি করে আসছেন। গত ২০ এপ্রিল তিনি বাজারের কর্মহীন ব্যক্তিদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের নামে লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেন। ৩০ এপ্রিল বাজার সংস্কার ও ২১ মে ঈদ বোনাসের নামে মোটা অঙ্কের চাঁদা তোলেন তিনি। তিনি বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য হওয়ায় নিজেকে কখনো অরুয়াইলের মেয়র, কখনো ম্যাজিস্ট্রেট দাবি করেন। তিনি ব্যবসায়ীদের নানা রকম হুমকি–ধমকি দিয়ে তটস্থ রাখেন। তিনি বাজারের সরকারি ভূমি দখল করে নিয়েছেন। তিনি এ বাজারে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। ব্যবসায়ীরা বাজার পরিচালনা কমিটি থেকে তাঁর অপসারণসহ প্রতিকার দাবি করেন।

আজ বিকেলে ইউএনওর কাছে ওই অভিযোগ দেওয়ার সময় অরুয়াইল ইউপির চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন ভূঁইয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিজানুর রহমান, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক ও বাজার পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক বোরহান উদ্দিন, অরুয়াইল বাজার বণিক সমিতির সভাপতি ক্ষিরোধ চন্দ্র বোস, বাজারের ব্যবসায়ী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মফিজ উদ্দিনসহ অর্ধশতাধিক লোক উপস্থিত ছিলেন।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কুতুব উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘শুধু ত্রাণের কথা বলে তিনি (আবু তালেব) বাজার থেকে অন্তত চার লাখ টাকা চাঁদাবাজি করেছেন। সাধারণ ব্যবসায়ীরা তাঁর কাছে জিম্মি। আমরা এর প্রতিকার চাই।’

এসব বিষয়ে আবু তালেব বলেন, ‘সবার সঙ্গে পরামর্শ করেই বাজার থেকে ৫৪ হাজার টাকা তুলে লক্ষাধিক টাকার ত্রাণ দিয়েছি। এখানে আমার নিজের টাকাই বেশি। এখন সবাই আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন। মিথ্যা নানা অভিযোগ করেছেন।’

জানতে চাইলে ইউএনও এ এস এম মোসা বলেন, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।