ভিডিও কনফারেন্সের পর রাতে সশরীরে শপথ নিলেন হাইকোর্টের ১৮ বিচারক

সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্ট

কারিগরি ত্রুটির কারণে কোনো কোনো বিচারপতির শপথ গ্রহণ স্পষ্টভাবে শ্রুত না হওয়ার প্রেক্ষাপটে হাইকোর্ট বিভাগে স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া ১৮ বিচারক গতকাল রাতে সশরীরে শপথ নিয়েছেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন তাঁর খাস কামরায় (সুপ্রিম কোর্ট) সশরীরে বিচারপতিদের পুনরায় শপথবাক্য পাঠ করান। শনিবার রাত সাড়ে নয়টা থেকে শপথ গ্রহণ শুরু হয়। পর্যায়ক্রমে ১৮ বিচারপতি শপথ নেন। গতকাল বেলা তিনটায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি তাঁদের শপথ পড়িয়েছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে দেখা যায়, হাইকোর্ট বিভাগের ১৮ জন অতিরিক্ত বিচারকের হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে শপথ গ্রহণ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবর স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি আজ রোববার প্রকাশিত হয়েছে।
৩০ মে স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য, ৩০ মে (শনিবার) বেলা তিনটায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি তাঁদের (১৮ বিচারপতি) শপথ পাঠ করান। তবে ওই শপথ পাঠ অনুষ্ঠানে কারিগরি ত্রুটির কারণে শপথ গ্রহণকারী কোনো কোনো বিচারপতির শপথ গ্রহণ স্পষ্টভাবে শ্রুত না হওয়ায় প্রধান বিচারপতি পুনরায় সশরীরে তাঁদের শপথ পাঠ করানোর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তদনুসারে ৩০ মে (শনিবার) রাত সাড়ে নয়টায় প্রধান বিচারপতির খাস কামরায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সশরীরে তাঁদের শপথ পাঠ করান।

হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত ১৮ বিচারককে হাইকোর্টের বিচারক হিসেবে গত শুক্রবার নিয়োগ দেওয়া হয়। শপথ গ্রহণের তারিখ থেকে তাঁদের নিয়োগ কার্যকর হবে বলে শুক্রবার জারি করা তাঁদের নিয়োগসংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়। ৩০ মে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ১৮ বিচারপতি প্রথম শপথ নেন। পরে রাতে সশরীরে শপথ নেন।

১৮ বিচারপতি হলেন বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার, বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিন, বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিচারপতি ফাতেমা নজীব, বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা, বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান, বিচারপতি খিজির হায়াত, বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকার, বিচারপতি মোহাম্মদ আলী, বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীম, বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খান, বিচারপতি মো. খায়রুল আলম, বিচারপতি এস এম মনিরুজ্জামান, বিচারপতি আহমেদ সোহেল, বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর, বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।

২০১৮ সালের ৩০ মে সংবিধানের ৯৮ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি ২ বছরের জন্য হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে ১৮ জনকে নিয়োগ দেন। পরদিন শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তাঁদের ওই নিয়োগ কার্যকর হয়। দুই বছর মেয়াদ শেষে গতকাল শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তাঁরা হাইকোর্ট বিভাগের বিচারক হিসেবে স্থায়ী হলেন।

ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে চেম্বার কোর্ট ২ ও ৯ জুন
দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ও শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ৩১ মে থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে জানিয়ে ইতিমধ্যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এই সময়ে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে হাইকোর্টে বিচারকার্য পরিচালনার জন্য ১১টি বেঞ্চ গঠন করে দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি। আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে ২ ও ৯ জুন আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্টে শুনানি গ্রহণ করবেন।
আজ রোববার আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল আলম ভূঞা স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে চেম্বার কোর্টবিষয়ক ওই তথ্য জানা যায়।

সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিস খুলেছে
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে সরকারি অন্যান্য অফিসের মতো সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসও খুলেছে। আইন সহায়তাপ্রত্যাশীদের অফিসে আসতে হলে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করে আসতে হবে, তবে প্রবেশের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ অন্যান্য বিষয় অফিস নিশ্চিত করছে বলে জানা যায়।

সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের সমন্বয়ক রিপন পৌল স্কু জানান, করোনা প্রার্দুভারের কারণে আইন সহায়তাপ্রত্যাশীদের সরাসরি অফিসে না এসে নির্ধারিত নম্বরে (০১৭০০-৭৮৪২৭০) যোগাযোগ করলেই আইনি পরামর্শের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আইনি সহায়তাপ্রত্যাশীর ঠিকানায় পাঠানো হবে, যা পরবর্তী সময়ে মামলার অন্যান্য ডকুমেন্টের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।