৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন স্থগিত চেয়ে এবং ইউনাইটেডে আগুনে মৃত্যুতে বিচারিক তদন্ত চেয়ে পৃথক রিট

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সরকারি–বেসরকারি হাসপাতালে গর্ভবতী নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা (কোভিড-১৯) পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

‘ভর্তি নেয়নি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রাস্তায় সন্তান প্রসব করলেন নারী’ শিরোনামে একটি দৈনিকের অনলাইন সংস্করণে গত ২৬ মে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এটিসহ এ বিষয়ে গণমাধ্যমে আসা কয়েকটি প্রতিবেদন যুক্ত করে গর্ভবতী নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা পরীক্ষাসহ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানভীর আহমেদ গতকাল রোববার ওই রিটটি করেন।

ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে আজ আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।

পরে অমিত তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে গর্ভবতী নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করোনা পরীক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। স্বাস্থ্যসচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের প্রতি ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ইউনাইটেডে আগুনে মৃত্যু, বিচারিক তদন্ত চেয়ে রিট
রাজধানীর গুলশানে ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে পাঁচজনের মৃত্যুর ঘটনায় বিচারিক তদন্ত চেয়ে রিট করেছেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। ওই ঘটনায় কেন বিচারিক তদন্ত করা হবে না, সে বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছে রিটে। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের হাইকোর্ট বেঞ্চে ই-মেইলের মাধ্যমে আজ রিটটি জমা দেন আবেদনকারীদের আইনজীবী। রিট আবেদনকারী দুই আইনজীবী হলেন, রেদওয়ান আহমেদ ও হামিদুল মিসবাহ।

২৭ মে হাসপাতালটির মূল ভবনের বাইরে আইসোলেশন ইউনিটে আগুন লেগে লাইফসাপোর্টে থাকা পাঁচ রোগীর মৃত্যু হয়। ওই আইসোলেশন ইউনিট স্থাপন ও এর কার্যক্রম পরিচালনার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে রিটটি করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী রেদওয়ান আহমেদ।

রিট আবেদনকারী রেদওয়ান আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পর কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হাসপাতালটিকে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, এ বিষয়ে রুলও চাওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যসচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষসহ আটজনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন স্থগিত চেয়ে রিট
বাস ও মিনিবাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে প্রজ্ঞাপনটির কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছে। বিচারপতি জে বি এম হাসানের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ ই-মেইলের মাধ্যমে ওই রিটটি জমা দেন আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) বাস-মিনিবাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে ৩১ মে ওই প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি ও আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির ওই রিটটি করেন।

রিটের বিষয়টি জানিয়ে পরে আইনজীবী মো. হুমায়ন কবির বলেন, দেশের নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত অধিকাংশ মানুষের যানবাহন হচ্ছে বাস ও মিনিবাস। অথচ করোনাকালে যখন সাধারণ মানুষ আর্থিক সংকটে ভুগছে, এমন সময়ে বাস ও মিনিবাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়িয়ে বিআরটিএ প্রজ্ঞাপনটি জারি করে। যেখানে বলা হয়, বর্তমান ভাড়ার চেয়ে অতিরিক্ত ৬০ ভাগ ভাড়া বৃদ্ধি করা হলো। এই ভাড়া বৃদ্ধি অযৌক্তিক, মানুষের মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী ও নিপীড়নমূলক পদক্ষেপ বলে রিটে বলা হয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার রিটের ওপর শুনানি হতে পারে বলে আশা করেন তিনি।

হাইকোর্টে জামিন হয়নি সাবেক ডিআইজি বজলুর রশিদের
৩ কোটি ৮ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় কারা অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (সাময়িক বরখাস্ত) বজলুর রশীদ হাইকোর্ট থেকে জামিন পাননি। তাঁর জামিন আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।

আদালতে জামিন আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী মেজবাহুল ইসলাম এবং দুদকের পক্ষে ছিলন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। পরে খুরশীদ আলম খান প্রথম আলোকে বলেন, বজলুর রশিদের জামিন আবেদনটি না চালানোর কথা তাঁর আইনজীবী জানালে আদালত তা উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন। এর ফলে বজলুর রশিদের জামিন হয়নি। আপাতত তাঁকে কারাগারেই থাকতে হচ্ছে।

এর আগে গত বছরের ২০ অক্টোবর বজলুর রশীদের বিরুদ্ধে মামলটি করে দুদক। সেদিনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তাঁকে আদালতে হাজির করা হলে কারাগারে পাঠানো হয়। এই মামলায় চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি বজলুর রশীদের প্রশ্নে জারি রুল খারিজ করে দেন হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিম্ন আদালতে জামিন আবেদন করেন বজলুর রশীদ। এতে বিফল হয়ে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন তিনি, যা গত ১৩ মে হাইকোর্টের একটি ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন আদালত হাইকোর্টের নিয়মিত বেঞ্চে আবেদনটি উপস্থাপন করতে বলেন।

এ বিষয়ে আইনজীবী মেজবাহুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, যেহেতু নিয়মিত বেঞ্চ বসতে কিছুটা সময় লাগবে, সে কারণে হাইকোর্টের ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চে আবেদনটি উত্থাপন করে তা না চালানোর কথা বলেছি। আদালত আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন।