আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত ১০০ পরিবারকে ত্রাণ দিল প্রথম আলো ট্রাস্ট

সীমা আক্তারের (৩০) স্বামী কালু মিয়া বেকারির শ্রমিক। করোনা পরিস্থিতিতে দুই মাস হাতে কাজ নেই। তার ওপরে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ছোবলে জীর্ণ ঘরটির চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। জোয়ারের পানিতে দিনে-রাতে দুবার করে ঘরদোর ভাসে। এমন দুর্যোগে ঘরে খাবার নেই। ছোট্ট বাচ্চাটার মুখে একমুঠো খাবার তুলে দেবেন, সেই সামর্থ্যও নেই।

বরিশালের মোহাম্মদপুর চরের বাসিন্দা সীমা আক্তার আজ সোমবার দুপুরে প্রথম আলো ট্রাস্টের খাদ্যসহায়তা পাওয়ার পর তাঁর আনন্দ ধরছিল না। বললেন, ‘খুব উপকার করলেন আমনেরা। ঘরে খাওনের টানাটানি। এহন কয়দিন দুগ্গা ভাত-ডাইল-আলু দিয়া নিশ্চিন্তে দিন চালাইতে পারমু।’

বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া গ্রামের ষাটোর্ধ্ব মরিয়ম বেগম রোগ-শোকে এখন আর বেশি হাঁটাচলা করতে পারেন না। কীর্তনখোলার ভাঙনে তাঁর ঘরদোর সব গেছে। স্বামী মারা গেছেন বছর চারেক আগে। এখন মেয়েদের নিয়ে থাকেন নদীপাড়ে সরকারি জমিতে। সে ঘরও আম্পানের ছোবলে ক্ষতিগ্রস্ত। দুই মেয়ে গৃহপরিচারিকার কাজ করে এবং নিজে চেয়েচিন্তে সংসার চালাতেন। করোনার কারণে দুই মাস ধরে মেয়েদের কাজ নেই। নিজেও বাইরে যেতে পারেন না। তাই ঘরে খাবারের টানাটানিতে একবেলা খান তো দুবেলা না খেয়ে দিন চলে। লাঠি হাতে ভর দিয়ে তিনি প্রথম আলো ট্রাস্টের দেওয়া খাদ্যসহায়তা হাতে নিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। বললেন, ‘আল্লায় তোমাগো ভালো করুক, বাবা। এহন কয়ডা দিন একটু প্যাট ভইরা ভাত খাইতে পারমু।’

বরিশাল নগরের কীর্তনখোলা তীরের মোহাম্মদপুর চর, পলাশপুর, সদর উপজেলার চরবাড়িয়া এলাকার আম্পানে ক্ষতিগ্রস্ত এমন ১০০ অসহায় দরিদ্র পরিবারের মধ্যে প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে খাদ্যসহায়তা দেওয়া হয়। পলাশপুর হজরত শাহজালাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দুপুর ১২টায় এই সহায়তা বিতরণ করেন বন্ধুসভার সদস্যরা।

এ সময় স্থানীয় কলেজছাত্র বেলাল হোসেন, বরিশাল জেলা বন্ধুসভার সভাপতি মেহদি হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক নাইমুল ইসলাম, প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক এম জসীম উদ্দীনসহ বন্ধুসভার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।