পা দিয়ে লিখে দাখিলে সাফল্য হাবিবুরের

রাজবাড়ী
রাজবাড়ী

জন্ম থেকে দুটি হাত নেই রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার হিমায়েতখালী গ্রামের মো. হাবিবুর রহমানের। শারীরিক প্রতিবন্ধী সে। কিন্তু শারীরিক সমস্যা তাকে দমাতে পারেনি। আর্থিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতা জয় করে এবারের দাখিল পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাফল্য রেখেছে সে।

হাবিবুর এবারের দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে জিপিএ ৪.৬৩ পেয়েছে। বাবার নাম মো. আবদুস সামাদ। মা হেলেনা খাতুন। তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে হাবিবুর তৃতীয়। বাবা বর্গা চাষি। হাবিবুর পুঁইজোর ফাজিল মাদ্রাসা থেকে এবারের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে।


হাবিবুরের সাফল্যে মুগ্ধ হয়ে আগামী দুই বছর তার পড়ালেখার ব্যয়ভার করার দায়িত্ব নিয়েছেন নুরে আলম সিদ্দিকী হক। তিনি কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় হাবিবুর জিপিএ ৪.৬৭ পেয়েছিল। জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট পরীক্ষাতে সে পায় জিপিএ ৪.৬১।


হাবিবুরের মা হেলেনা খাতুন বলেন, 'আমাদের অভাব অনটনের সংসার। জন্ম থেকেই ছেলের দুটো হাত নেই। কিন্তু তার পড়ালেখার প্রতি ঝোঁক ছিল ছোটবেলা থেকেই। এ কারণে আমরা তাকে স্কুলে ভর্তি করে দেই। হাত না থাকায় পড়ালেখা করতে কষ্ট হয়। পা দিয়েই বইয়ের পাতা উল্টায়। লেখে। আমাদের দেখে কষ্ট হয়।'


হাবিবুর অবশ্য আরও ভালো ফলের আশা করেছিল। সে বলল, 'আমি মনোযোগ দিয়ে পড়ালেখা করেছি। এতে আমার মা-বাবা, বোনেরা, চাচা ও শিক্ষকেরা সহায়তা করেছেন। সবার সহযোগিতা না পেলে আমার পড়ালেখা করা সম্ভব হতো না।'


পুঁইজোর ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সাইদ আহমেদ বলেন, শারীরিক সমস্যা থাকলেও হাবিবুর নিয়মিত মাদ্রাসায় আসতো। অনেক সময় সহপাঠীদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত ব্যবহার পায়নি।


নুরে আলম সিদ্দিকী হক বলেন, 'হাবিবুর একজন অদম্য মেধাবী। সে প্রতিবন্ধকতা জয় করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে। তবে ওরা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল। এ কারণে আমি ওর আগামী দুই বছরের পড়ালেখার খরচ বহন করব।'