বগুড়ায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা

নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবু হানিফ।
নিহত স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আবু হানিফ।

এলাকায় আধিপত্য নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে বগুড়ায় প্রকাশ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু হানিফ ওরফে মিষ্টারকে (৪০) হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টায় বগুড়া শহরের উপকণ্ঠ শাজাহানপুর উপজেলার শাকপালা মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শাকপালা মোড়ের জামে মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে শুক্রবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হন আবু হানিফ। মসজিদে পৌঁছার আগেই একটি মোটরসাইকেলে আসা তিন অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্ত তাঁর ওপর হামলা করে। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হামলাকারীরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় আবু হানিফকে উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন। এর আধা ঘণ্টা পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

আবু হানিফের বাড়ি শাজাহানপুর উপজেলার শাকপালা মহল্লায়। আবু হানিফের সাংগঠনিক পরিচয় নিশ্চিত করেছেন বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জুলফিকার রহমান।

বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ববিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করতে যাওয়ার পথে প্রকাশ্যে তিন দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে আবু হানিফকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের আটকের চেষ্টা চলছে।

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আবু হানিফ নিজেও তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তাঁর বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ২৬ মে শাজাহানপুর উপজেলার গণ্ডগ্রামে যুবলীগ নেতা মজনু এবং তাঁর ভাতিজা নাহিদকে কুপিয়ে হত্যা মামলা ছাড়াও চারটি হত্যা-খুনসহ ৯টি মামলা রয়েছে। হানিফ শাজাহানপুর উপজেলার শাকপালা থেকে নন্দীগ্রাম পর্যন্ত চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসীসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতেন।

পুলিশের নথি অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ২৬ মে জায়গা দখলের টাকার ভাগ–বাঁটোয়ারাকে কেন্দ্র করে শাজাহানপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৎকালীন সভাপতি আবু জাফরের গণ্ডগ্রাম নয়াপাড়া এলাকার বাসায় জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। এদিন শাজাহানপুর উপজেলা যুবলীগের সদস্য মজনু মিয়া ও তাঁর ভাতিজা যুবলীগের কর্মী নাহিদ হাসানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মজনু মিয়া একই এলাকার যুবলীগের নেতা শাহীন হত্যা মামলার প্রধান আসামি এবং পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছিলেন। এই জোড়া হত্যা মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন আবু হানিফ। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসে মজনু-নাহিদ জোড়া হত্যা মামলায় আবু হানিফসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।