করোনা সন্দেহে মাকে রাস্তায় ফেলে গেলেন ছেলে, পুলিশ নিল হাসপাতালে

করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি
করোনাভাইরাস। প্রতীকী ছবি

কয়েক দিন ধরে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন ৫৫ বছর বয়সী মনিরা বেগম। রাজধানীর মিরপুর এলাকার একটি বস্তিতে ছেলের সঙ্গে থাকেন তিনি। করোনার উপসর্গ থাকায় আক্রান্ত সন্দেহে তাঁকে অন্য কোথাও যাওয়ার পরামর্শ দেন বস্তিঘরের মালিক। এরপর নিজের ছেলেই তাঁকে আজ শনিবার দুপুরে ফেলে যান ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে। সেখানে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে ফুটপাতে পড়ে থাকেন হতভাগ্য মনিরা বেগম। এরপর বিষয়টি নজরে আসার পর দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে পুলিশ।

ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে মনিরাকে তাঁর ছেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ভবনের সামনে ফেলে যান। সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। তিনি করোনায় আক্রান্ত কি না, পরীক্ষার পর তা জানা যাবে। তবে তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো নয় বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, মনিরা সপরিবার মিরপুর কমার্স কলেজের পাশের বস্তিতে আবদুস সালাম নামের এক ব্যক্তির বস্তিঘরে ভাড়া থাকেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার জয়রামপুর এলাকায়। সম্প্রতি শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় ঘরের মালিক তাঁকে বস্তিতে রাখা ঠিক হবে না বলে জানিয়ে দেন। তাঁকে অন্য কোথাও রেখে আসার কথাও বলেন।

এরপর মনিরার ছেলে মোজাম্মেল ও ঘরের মালিক সালাম মনিরাকে আজ দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ফেলে যান। ফেলে যাওয়ার পর হতভম্ব অবস্থায় কী করবেন বুঝতে পারছিলেন না তিনি। শারীরিক অবস্থা ভালো না হওয়ায় কাউকে ডেকে কিছু বলতেও পারেননি। আবার ফুটপাতে প্রায় সব সময়ই কিছু ভবঘুরে মানুষ থাকেন বলে তাঁর বিষয়টি প্রথমে কেউ বুঝতে পারেননি। আজ দুপুরে হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সচালকদের বিষয়টি নজরে আসে। ঘটনাটি তাঁরা পুলিশকে জানান। পরে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে করোনা ইউনিটে ভর্তি করে।

ঢাকা মেডিকেল ক্যাম্পের আরেক পুলিশ কর্মকর্তা আবদুর রহমান বলেন, মনিরার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তাঁর স্বজনদের খুঁজে বের করা হবে। এ ধরনের অমানবিক ঘটনার ব্যাপারে তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। বস্তিতে রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিতে পারতেন স্বজনেরা। তা না করে এমনভাবে রাস্তায় ফেলে যাওয়া গর্হিত অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।