সিলেট নগরে হঠাৎ যানজট, বাজার-সদাইয়ে ব্যস্ত মানুষ

সিলেট নগরে আজ রোববার বিভিন্ন এলাকায় ছিল অসহনীয় যানজট। দুপুরে নগরের বন্দরবাজার এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো
সিলেট নগরে আজ রোববার বিভিন্ন এলাকায় ছিল অসহনীয় যানজট। দুপুরে নগরের বন্দরবাজার এলাকায়। ছবি: প্রথম আলো

সিলেট নগরে আজ রোববার সকালে সড়কে মানুষের চলাচল এবং যানচলাচল স্বাভাবিক থাকলেও বেলা গড়াতেই দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। দুপুর থেকে বাড়তে থাকে মানুষের যাতায়াত। নগরের বিভিন্ন মোড়ে ছিল যানজট। নগরের নিত্যপণ্যের দোকানগুলোতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো।

সিলেট নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিলেটে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ‘রেড জোন’ ঘোষণা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রেড জোন ঘোষণা দেওয়া হলে এলাকাভিত্তিক লকডাউনের আওতায় থাকবে সিলেট। এ জন্য ঘরের আগাম বাজার-সদাই করতে বেড়িয়েছেন অনেকে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এলাকাভিত্তিক লকডাউনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। আক্রান্তের আধিক্য বিবেচনায় তিনটি ভাগে ভাগ করা হবে। এর মধ্যে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে চিহ্নিত করা হবে। রেড জোন এলাকায় করোনা ঠেকাতে থাকবে কঠোর ব্যবস্থাপনা।

নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেলা একটার দিক থেকে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল বাড়তে থাকে। এর আগে দুপুর ১২টায় সিলেট নগরে তুমুল বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির থামার পরপরই নগরের বিভিন্ন মোড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। নগরের শেখঘাট, কাজীরবাজার, লামাবাজার, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, মহাজনপট্টি, কালীঘাট, রিকাবীবাজার, আম্বরখানা, সুবিদবাজার, বারুতখানা, নয়সড়ক এলাকায় দেখা গেছে যানজট।

নগরের পাইকারি নিত্যপণ্যের বাজার কালীঘাট, হকার্স মার্কেট, ও মহাজনপট্টিতে ছিল মানুষের অতিরিক্ত চাপ। তবে এতে মানা হচ্ছে না কোনো স্বাস্থবিধি। নিত্যপণ্যের বাজার-সদাই করতে আসা অধিকাংশ লোকজনকে মাস্কও ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। কয়েকজনের মাস্ক থাকলেও সেটি থুতনিতে রেখে নাক-মুখ খোলা রেখে কথা বলতে দেখা যায়।

মহাজনপট্টি এলাকার নিত্যপণ্যের পাইকারি বিক্রেতা হোসেন ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী ফাহাদ মো. হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকালে বাজারে খুব একটা ভিড় ছিল না। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে বাড়তে থাকে ক্রেতাদের ভিড়। এতে যানজটও বেড়ে যায়। যাঁরা বাজার-সদাই করতে আসছেন, তাঁরা একসঙ্গে প্রায় এক মাসের বাজার করে নিয়ে যাচ্ছেন। শুনেছি, সিলেটকে আবারও লকডাউন করা হবে। এ জন্য বাজারে ভিড় বেড়েছে।’

কালীঘাট এলাকার নিত্যপণ্যের মালামাল বিক্রয়কারী রফিক অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক রফিক মিয়া বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ থাকলেও আমাদের ভিড়ের মধ্যেই ক্রেতাদের ফরমাশ দিতে হচ্ছে। আমরা অনেকটা নিরুপায়। তারপরও নিজেদের সুরক্ষার জন্য মাস্ক ও গ্লাভস ব্যবহার করছি।’

কালীঘাটে নিত্যপণ্যের বাজার করতে আসা রতন মল্লিক বলেন, ‘শুনেছি, সিলেটে করোনা রোগী বেড়েছে। এ জন্য মানুষকে ঘর থেকে বের হতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। এ জন্য আগাম বাজার করতে এসেছি। লকডাউন করা হলে পণ্যের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে।’

জিয়াউল হাসান নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘সিলেটকে লকডাউন করা হবে এমন খবর দিয়েছেন আমার এক বন্ধু। এ জন্য ঘরের প্রয়োজনীয় নিত্যপণ্য কিনতে এসেছি।’ বাজারে ভিড় হঠাৎই বেড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সকালে একটি কাজের জন্য বাইরে বেড়িয়েছিলাম। সে সময় বন্দরবাজার হয়ে সোবহানীঘাট এলাকায় গিয়েছিলাম। রাস্তাঘাটে স্বাভাবিক যানচলাচল ছিল। বেলা একটার দিক থেকেই শুরু হয়েছে নগরের বিভিন্ন মোড়ে যানজট।’

সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত ১১ এপ্রিল থেকে সিলেট জেলা লকডাউন করা হয়। ‌ জোনে বিভক্ত করে লকডাউনের ব‌্যাপারে আমরা এখনও কোনো নির্দেশনা পাইনি। নির্দেশনা পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’