নিজের 'খামখেয়ালিতে' নিরাপদ আশ্রয় হারিয়ে কাঁদছে শিশুটি

কোনো এক দরকারে মায়ের কাছে পাঁচটা টাকার বায়না ধরেছিল শিশুটি। নদীভাঙনে নিঃস্ব হতদরিদ্র মা টাকাটা দিতে পারেননি। এই ক্ষোভে হঠাৎ মাকে আঘাত করে বসে শিশুটি। তার হাসুয়ার কোপে রক্তাক্ত মাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু ততক্ষণে মায়ের দেহে আর প্রাণ নেই।

মাকে আঘাতের পর হতবিহ্বল শিশুটি (৭) দৌড়ে ফুফুর বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানে মায়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর কাঁদতে শুরু করে। আজ সোমবার সকাল আটটার দিকে রাজশাহী শহরের উপকণ্ঠ পবা উপজেলার বেড়পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত মায়ের নাম ফাতেমা-তুজ-জোহরা (২২)। ফাতেমার স্বামীর নাম রবিউল ইসলাম। তিনি একজন দিনমজুর। এলাকাটি রাজশাহী নগরের দামকুড়া থানার অন্তর্ভুক্ত। এই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, পাঁচটি টাকা চেয়ে না পেয়ে ক্ষুব্ধ শিশুটি মাকে হাসুয়া দিয়ে কোপ দিয়েছে। এরপর সে তার ফুফুর বাড়িতে চলে গিয়েছিল। সেখান থেকে তাকে আনা হয়েছে। সে সব স্বীকার করছে। মা তাকে টাকা দেয়নি। বাবা মেরেছে। মাও মেরেছে, তাই রাগ করে সে মাকে হাসুয়া দিয়ে আঘাত করেছে। এতে মায়ের রক্ত বের হয়েছে। এটা সে জানে। এরপর যখন তাকে জানানো হলো যে তার হাসুয়ার আঘাতে তার মা মারা গেছে, তখন সে মায়ের জন্য কাঁদতে শুরু করে।

এই অবস্থায় কী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, এই ঘটনা নিয়ে তাঁরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েছেন। ৯ বছরের কম বয়সী কোনো শিশুর অপরাধকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করার আইনি বিধান নেই। তিনি তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এবং বিচারকদের সঙ্গেও পরামর্শ করছেন। বিভিন্ন পক্ষ থেকে বিভিন্ন রকম মতামত দেওয়া হচ্ছে। বেলা দেড়টায় ওসির সঙ্গে কথা হয়। তিনি কোনোই সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি বলে জানান।

শিশুটির মায়ের লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা আছে। ময়নাতদন্তের পর লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন ওসি।