সিলেট পুরোনো কারাগারে করোনা হাসপাতাল করার প্রস্তাব মেয়রের

কোভিড-১৯ রোগীদের সরকারি চিকিৎসার জন্য সিলেটের পুরোনো কারাগারে ৫০০ শয্যার করোনা হাসপাতাল করার প্রস্তাব করেছেন সিলেটের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি বলেছেন, পুরোনো কারাগারকে হাসপাতালে রূপ দিতে অবকাঠামোগত সহযোগিতা দিতে সিটি করপোরেশন প্রস্তুত। চিকিৎসকসহ অন্যান্য সুবিধার বিষয়টি সরকারিভাবে নিশ্চিত করার প্রস্তাব তাঁর।

সিলেটে ৫০০ শয্যার নতুন করোনা হাসপাতাল চেয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক ও সিলেট-১ (মহানগর-সদর) আসনের সাংসদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনকে চিঠি দিয়েছিলেন মেয়র আরিফুল হক। আজ বুধবার স্থানীয় সাংসদ হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আরেকটি চিঠি দিয়ে হাসপাতালের জন্য স্থান প্রস্তাব করেন সিটি মেয়র। মেয়রের দপ্তর থেকে ই-মেইলে ও ডাকযোগে চিঠিটি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে বলে সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে।

এ বিষয়ে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ৫০০ শয্যার করোনা হাসপাতাল স্থাপনের দাবির সঙ্গে নির্দিষ্ট করে সিলেটের পুরোনো কারাগারকে স্থান হিসেবে প্রস্তাব করে দ্বিতীয় চিঠি দেওয়া হয়েছে। বাস্তব অবস্থা বিবেচনা করে এ প্রস্তাব করেছেন তিনি।

সিলেট নগরীর কেন্দ্রস্থলের ধোপাদিঘিরপার এলাকায় সিলেটের পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগার। প্রায় ২৪ একর জায়গাজুড়ে ১৭৮৯ সালে এই কারাগার স্থাপন করা হয়েছিল। নগর থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরে বাদাঘাটে নতুন কেন্দ্রীয় কারাগার হলে ২০১৯ সালের ১১ জানুয়ারি পুরোনো কারাগার থেকে বাদাঘাটে নতুন কারাগারে বন্দী স্থানান্তর হয়। এরপর থেকে পুরোনো কারাগারটি কারা প্রশাসনের একটি দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

মেয়র তাঁর চিঠিতে করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির সর্বশেষ তথ্য উল্লেখ করে জানিয়েছেন, সিলেটে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। ১০০ শয্যার শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে রোগীদের স্থান সংকুলান হচ্ছে না। পাশাপাশি দুটি বেসরকারি হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও ব্যয় সাধারণ মানুষের পক্ষে বহন করা সম্ভব নয়। এ অবস্থায় সরকারি চিকিৎসার প্রসারে আরও হাসপাতাল প্রস্তুত প্রয়োজন।

সিলেটের সার্বিক পরিস্থিতি ক্রমে অবনতির দিকে যাচ্ছে এবং পরিস্থিতি অবনতির দিকে যাওয়ার আগেই ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারটির অবস্থান নগরীর প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে। মহানগরসহ আশপাশ এলাকার করোনা রোগীদের জন্য এটি ব্যবহার করলে সবচেয়ে উপকৃত হবে মানুষ। চিঠিতে মেয়র কারাগারকে অস্থায়ীভভাবে হাসপাতাল রূপান্তরে রোগীর শয্যাসহ অবকাঠামোগত দিক সিটি করপোরেশন থেকে দ্রুত প্রস্তুত করে দেওয়ার সক্ষমতা আছে উল্লেখ করা হয়। এ প্রসঙ্গে বলা হয়, ‘রোগীর বেডসহ অন্যান্য অবকাঠামো সিটি করপোরেশন সরবরাহ করবে। চিকিৎসকসহ আনুষঙ্গিক সরঞ্জমাদি সরকার সরবরাহ করলে করোনায় বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবার দিকটি প্রসার হবে।’

সিলেট বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ (বুধবার) তথ্য অনুযায়ী, বিভাগের ৪ জেলায় কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৩১। জেলাভিত্তিক হিসাবে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় সবার ওপরে সিলেট জেলা। এই জেলায় এখন করোনায় সংক্রমিতের সংখ্যা ৯৮৮। বিভাগের অপর তিন জেলা হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজারেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ছে। সরকারিভাবে করোনা রোগী ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নির্ধারিত রয়েছে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল। এ হাসপাতালের শয্যাসংখ্যা ১০০।