নড়াইলে ভালো সড়কে নতুন প্রলেপ

নড়াইল-যশোর সড়কের পৌরসভা অংশে এক বছর আগে সংস্কার করা ভালো সড়কের এক পাশে নতুন করে পিচঢালাই করা হয়েছে। গতকাল বুধবার নড়াইল প্রেসক্লাব মার্কেটের সামনে। ছবি: প্রথম আলো
নড়াইল-যশোর সড়কের পৌরসভা অংশে এক বছর আগে সংস্কার করা ভালো সড়কের এক পাশে নতুন করে পিচঢালাই করা হয়েছে। গতকাল বুধবার নড়াইল প্রেসক্লাব মার্কেটের সামনে। ছবি: প্রথম আলো

নড়াইলে ভালো সড়কের ওপর নতুন করে পিচঢালাইয়ের কাজ করা হচ্ছে। এতে সরকারের বিপুল টাকার অপচয় হচ্ছে। এ অবস্থায় নড়াইল পৌর মেয়রের প্রতিবাদের মুখে কাজটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ নড়াইল-যশোর সড়কে প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ দশমিক ৭২৯ কিলোমিটার সড়ক পাকাকরণের কাজ হাতে নিয়েছে। রানা বিল্ডার্স নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ করছে। নড়াইল পৌর এলাকার বউবাজার থেকে সীমাখালী মোড় পযর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার অংশের কাজ করছে উপঠিকাদার নড়াইলের ইডেন প্রাইজ কনস্ট্রাকশন। নড়াইল পৌর মেয়র বলছেন, গত বছর সড়কের এই অংশে পৌরসভা কাজ করেছে। বছর শেষ না হতেই ভালো সড়কের ওপর নতুন করে কেন কাজ করা হচ্ছে?

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের বউবাজার থেকে নড়াইল প্রেসক্লাব মার্কেট পর্যন্ত সড়কের আধা কিলোমিটার অংশে পিচের কাজ চলছে। সড়কটি ২৪ ফুট প্রশস্ত হলেও নতুন বিটুমিন মিশ্রিত পাথরের পিচঢালাই হচ্ছে ১৮ ফুট চওড়া করে। এতে সড়কের প্রশস্ততা ৬ ফুট কমে যাচ্ছে। এ ছাড়া সড়কে বিটুমিন ও পাথরের ২ ইঞ্চি পুরু স্তর করার কথা থাকলেও তা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানতে চাইলে উপঠিকাদার মো. রেজাউল আলম বলেন, সড়ক ও জনপথ বিভাগ নড়াইল-যশোর সড়কে শহরের সাড়ে তিন কিলোমিটার অংশে ১৮ ফুট চওড়া করে সড়ক নির্মাণকাজের দরপত্র দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সরকারি নিয়মের বাইরে কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্ট বিভাগ সড়ক ২৪ ফুট চওড়া করার সিদ্ধান্ত দিলে আমরা তা করতে প্রস্তুত।’ তিনি দাবি করেন এখানে কাজের কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে না।

নড়াইল পৌর মেয়র বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এক বছর আগে পৌর এলাকার সীমানা পর্যন্ত সড়ক সংস্কার করা হয়েছে। ভালো সড়কের ওপর সড়ক বিভাগ নতুন করে সংস্কারকাজ করছে। তা–ও ২৪ ফুট চওড়া সড়ক ১৮ ফুট করছে। তিনি মনে করেন, এটা সরকারের টাকার অপচয় ছাড়া আর কিছু নয়।
পৌর মেয়র বলেন, পৌরসভার সংস্কার করা ভালো সড়কের ওপর প্রলেপ না দিয়ে সড়ক বিভাগ অন্য কোনো ভাঙা রাস্তায় কাজ করতে পারত। নড়াইল-যশোর সড়কের নড়াইল পৌর এলাকার অংশটুকু স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে ছেড়ে দেওয়ার দাবি তোলেন মেয়র।


সড়ক ও জনপথ বিভাগ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওমর আলী প্রথম আলোকে বলেন, সড়কের কোথাও ২৪, কোথাও ২২ আবার কোথাও ১৮ ফুট চওড়া রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে হিসাব করার কারণে রাস্তার সব স্থানের পরিমাপ করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে সমস্যা হয়েছে। তিনি বলেন, কাজ আপাতত বন্ধ রয়েছে। পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করা যায় কি না, সে চেষ্টা চলছে।
ভালো সড়কে নতুন করে সংস্কারকাজ কেন, এতে সরকারের টাকার অপচয় হচ্ছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সড়ক তো খারাপই ছিল।