শ্রীপুরে আক্রান্ত সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে সাবেক এক ব্যাংক কর্মকর্তার (৬০) মৃত্যু হয়েছে। ওই ব্যক্তি করোনায় সংক্রমিত হওয়ার পর বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। গতকাল বুধবার হঠাৎ শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাঁকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ওই ব্যক্তির স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন, শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ার পর ওই ব্যক্তিকে শ্রীপুর থেকে ঢাকার একটি হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়ার জন্য স্থানীয় একটি হাসপাতালে বারবার অনুরোধ করলেও তাঁরা অ্যাম্বুলেন্স দেয়নি। পরে অন্য ব্যবস্থাপনায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল নয়টায় স্বস্থ্যবিধি মেনে নিজ এলাকায় ওই ব্যক্তির দাফন হয়।

ওই ব্যক্তির শ্যালক প্রথম আলোকে জানান, ওই ব্যাংক কর্মকর্তা এতেকাফে বসেছিলেন। ঈদের দুই দিন আগে হঠাৎ জ্বর অনুভব করেন। এরপর তাঁর ছেলে একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তার সহায়তায় নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করেন। ৪ জুন নমুনা পরীক্ষায় তাঁর শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মেলে। তিনি এত দিন বাড়িতে আইসোলেশনে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। কিন্তু গতকাল হঠাৎ শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। সেদিন বেলা দুইটায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আইসিইউতে রাখা হয়। এরপর রাত সাড়ে সাতটায় তাঁর মৃত্যু হয়।

ব্যাংক কর্মকর্তার শ্যালক বলেন, গতকাল শ্বাসকষ্ট শুরু হওয়ায় মাওনা চৌরাস্তার আল-হেরা হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী আবুল হোসেনের কাছে অ্যাম্বুলেন্স চাওয়া হয়। প্রথমে দিতে রাজি হলেও পরে চালক রাজি হচ্ছে না অজুহাতে তিনি অ্যাম্বুলেন্স দেননি। কয়েকজন স্বজন বিভিন্নভাবে তদবির করলেও ওই হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্স দেয়নি। পরে বিকল্প ব্যবস্থায় তাঁকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি আরও বলেন, আল-হেরা হাসপাতালে তিনটি অ্যাম্বুলেন্স থাকার পরও এই করোনাকালে অ্যাম্বুলেন্স না পাওয়া তাঁদের চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে। এভাবে মানুষকে সেবা দেওয়ার নামে হয়রানি করা হচ্ছে। দুঃসময়ে যদি মানুষ সেবা না পায়, তাহলে এটা কেমন মানবসেবা।

জানতে চাইলে আল-হেরা হাসপাতালের স্বত্ত্বাধিকারী আবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, চালক কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না। তাই অ্যাম্বুলেন্স দিতে পারেননি। তাঁর হাসপাতালের তিনটি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে একটি নষ্ট। অপর একটির চালক চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। আবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা তো সেবা দিতেই বসেছি। সুযোগ থাকলে নিশ্চয়ই অ্যাম্বুলেন্স দিতাম।’