গাজীপুরে আরও ২২ জনের করোনা শনাক্ত, মৃত্যু ২

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স
করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

গাজীপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২৬ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে জেলায় কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্য দুজনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত হলেন ২ হাজার ১৪৩ জন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ২২ জন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকে গাজীপুরে প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা। তাঁর সঙ্গে বাড়ছে মারা যাওয়া মানুষের সংখ্যাও। সর্বশেষ গত বুধবার গাজীপুরের টঙ্গী ও শ্রীপুর উপজেলায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই বিভিন্ন পোশাক তৈরি কারখানার শ্রমিক। এমন পরিস্থিতির মধ্যে সাধারণ ছুটির পর জেলায় গণপরিবহন চলাচল শুরু হয়েছে। তবে সেখানে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি, বাড়েনি সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা।

সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ শুক্রবার নতুন করে আক্রান্ত ২৬ জনের মধ্যে কালিয়াকৈর ৮ জন, কালীগঞ্জ ১০ জন, শ্রীপুরে ৬ জন এবং গাজীপুর সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকার ২ জন আছেন। জেলায় মোট সংক্রমিত হয়েছেন ২ হাজার ১৪৩ জন। এর মধ্যে কালিয়াকৈরে ২৩০ জন, কালীগঞ্জে ১৯০, কাপাসিয়ায় ১৫০, শ্রীপুরে ২৩৬ এবং সদর উপজেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ১ হাজার ৩৩৭ জন। গাজীপুরে দেড় শ জন পর্যন্ত বিভিন্ন পোশাক তৈরি কারখানার শ্রমিকদের সংখ্যা আলাদা করে তালিকা করা হলেও বর্তমানে সেই তালিকা আর করা হচ্ছে না।

গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জয়দেবপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে যাওয়া যাত্রীবাহী বাসগুলো কোনো নিয়মনীতিই মানছে না। বাসগুলোর মধ্যে গাদাগাদি করে যাত্রীরা যাতায়াত করছেন। যাত্রীদের কারও কারও মুখে মাস্কও দেখা যায়নি। বাসের সহযোগীরা যেখানে–সেখানে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রীদের তুলছেন এবং নামিয়ে দিচ্ছেন। সামাজিক দূরত্বের কোনো বালাই নেই। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা, ভোগড়া, গাছা, টঙ্গী কলেজ গেট, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ী, মৌচাক, সফিপুর ও চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় যাত্রীবাহী যানবাহনে একই চিত্র দেখা গেছে।

গাজীপুরের বলাকা পরিবহনের চালক আফসার উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন বাসে জীবাণুনাশক ছিটানো হচ্ছে। তাঁরা ইচ্ছে করে বেশি যাত্রীদের তুলছেন না। যাত্রীরাই জোর করে বাসে উঠে পড়ছে। যাত্রীরা যদি স্বাস্থ্যবিধি না মানেন, তাঁদের কী করার আছে।

ওই বাসের সহযোগী সাইফুল মিয়া বলেন, আসনের বেশি যাত্রী ওঠানো হচ্ছে না। সড়কে যানবাহন কম থাকায় যাত্রীরা জোর করেই ওঠার চেষ্টা করেন।

করোনাকালে বাস চালানোর নতুন নির্দেশনা অনুসারে, একজন যাত্রীকে বাসের দুটি আসনের একটি আসনে বসিয়ে অপর আসনটি ফাঁকা রাখতে হবে। কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটে উল্লিখিত মোট আসনসংখ্যার অর্ধেকের বেশি যাত্রী বহন করা যাবে না এবং দাঁড়িয়ে কোনো যাত্রী বহন করা যাবে না।

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় যাত্রীবাহী বাস চলতে দেখা গেছে। তবে যাত্রীসংখ্যা কম। সাধারণ মানুষও খুব বেশি পরিবহনে উঠছে না। যাঁদের একান্ত প্রয়োজন, তাঁরাই গণপরিবহন ব্যবহার করছেন।

গাজীপুর মহানগর ট্রাফিক পুলিশের সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক বিভাগ) মো. নজরুল ইসলাম জানান, যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, তার জন্য সড়কের বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট রয়েছে। সেখানে তদারকি করা হচ্ছে।

এ ব্যাপারে গাজীপুরের সিভিল সার্জন মো. খাইরুজ্জামান জানান, জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৬ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া। গাজীপুর থেকে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৩৯৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে করোনায় শনাক্ত হয়েছেন ২ হাজার ১৪৩ জন।